“কয়েদী ৩৪৫ : গুয়ান্তানামোতে ছয় বছর” -বইয়ের কিছু কথা ২০০১ সাল। আফগানিস্তানে আমেরিকা জোট আক্রমন শুরু করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই সাংবাদিকদের কাজ হলো এতো বড় ঘটনা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়া। সামি আলহায ছিলেন বহুল পরিচিত গণমাধ্যম আলজাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্কের ফটোজার্নালিস্ট। অফিস থেকে আফগানিস্তানের সংবাদ কভার করতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো সামি আলহাযকে। কিন্তু পাক সীমান্তে আটকে গেলেন তিনি। নানা নাটকীয়তার পরে অবশেষে সামিকে তুলে (কিংবা বিক্রি করে) দেওয়া হলো মার্কিন বাহিনীর কাছে। অকথ্য নির্যাতনের মাধ্যমেই একজন সাংবাদিক সামি আলহাযকে স্বাগত জানালো মানবতাবাদী (!) মার্কিন সেনারা। এরপর একসময় পাঠিয়ে দেওয়া হলো কুখ্যাত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে। অত্যাচারের স্টিম রোলার চালানো হলো। নূন্যতম মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করা হলো। একে একে জীবন থেকে অন্যায়ভাবে কেড়ে নিলো ছয় ছয়টি বসন্ত। অতঃপর বলা হলো, “আমরা সত্যিই দুঃখিত, তোমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই” সামি আলহায একজন অকুতোভয় কয়েদী। তাকে আমেরিকা বন্দি করেছিল ঠিকই কিন্তু তার মনকে বন্দী করার সক্ষমতা ছিল না কারো। সামিকে বন্দি করেছিল ঠিকই কিন্তু হার মানাতে পারেনি। “কয়েদী ৩৪৫” শুধু একটি বই নয় এটি একটি জীবন্ত ইতিহাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সযত্নে লুকিয়ে রাখা এক মিথ্যার মুখোশ উন্মোচন। সামির আইনজীবির ভাষায় গুয়ান্তানামো সম্পর্কে সবচেয়ে নিখাদ বর্ণনা এই বইটি। সামির সাহস পথ দেখাবে আগামী প্রজন্মকে। সামির লেখনি শক্তি যোগাবে লাখো সাংবাদিককে নির্ভীক হতে।