"বিশ্বনবী" বইটির সম্পর্কে কিছু কথাঃ মহানবী (সা.) সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল ছিলেন, আল্লাহ্ তা'আলার বাণীবাহক ছিলেন; কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে তিনি ছিলেন সর্বতােভাবে একজন মানুষ, আদর্শ মানুষ। সাধারণ মানুষের পক্ষে দুঃসাধ্য এমন কোন অসম্ভব, অস্বাভাবিক ও আজগুবী আদেশ-নির্দেশও তিনি দেননি। যে বাণী ও যে সত্য তিনি প্রচার করেছেন, নিজের জীবনে তিনি তা পালন করেছেন। পবিত্র কোরআনে যা নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং তিনি নিজে যা উপদেশ দিয়েছেন, সবই তিনি নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করেছেন। অনেক মহা পুরুষের সাথে এখানেই তার পার্থক্য। | আজ থেকে চৌদ্দ শ’ বছর আগে মহানবী (সা.) যে জীবন-দর্শন ও জীবনের যে আদর্শ বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করেছেন, আজও তা পুরনাে হয়নি, হয়নি অকেজো। বর্তমানে সমাজ অনেক জটিল হয়েছে, একথা সত্য। মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা ও জীবনাদর্শ এই অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির মােকাবেলা করতে সক্ষম। অন্যভাবে বলা যায়, মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা ও জীবনাদর্শই আধুনিক জীবনের বিচিত্র সমস্যা-সংকুল পথে একমাত্র আলােকবর্তিকার কাজ করতে পারে। | নবুওয়তের মর্যাদা ছাড়াও তিনি ছিলেন পুরােপুরি ঐতিহাসিক মানুষ। তার সব কাজ-কর্ম, নীতি ও উপদেশ আর জীবনের সব খুঁটিনাটি লিপিবদ্ধ রয়েছে ইতিহাসে। মহানবী (সা.) নিজেই বলেছেন, “আমি তােমাদের মতই মানুষ। আমার নিকট শুধু আল্লাহর বাণী অবতীর্ণ হয়।” আর মানুষ হচ্ছে আশরাফুল। মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা। তাই তিনি মানুষকেই দিয়েছেন স্বীকৃতি, সম্মান ও মর্যাদা। বিশ্বনবীর (স.) জীবন, তার শিক্ষা ও নির্দেশগুলাে অনুধাবন করলেই বুঝা যাবে, মানুষ যাতে ছােট না হয়, তার মনুষ্যত্ব যাতে লাঞ্ছিত না হয় এবং মানুষ যাতে সর্বতােভাবে আত্মমর্যাদার জীবন যাপন করতে পারে, সে আদর্শই বিশ্বনবী (স.) মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। বর্তমান বিশৃংখলময় বিশ্বে এছাড়া ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তির বিকল্প কোন পথ নেই। এই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এর বাংলা অনুবাদ কিছু । সংযােজন সহ পাঠক সমাজের খেদমতে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস পাঠক সমাজকে অনুপ্রাণিত করলেই আমাদের শ্রম সার্থক মনে। করব। তাছাড়া পাঠককুলের যে কোন পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ রাব্বল আলামীন আমাদের সবাইকে কবুল করুন।