১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর হিটলারের নাজি জার্মানি উদ্ভাবিত ‘ব্লিজক্রিগ’ নামক এক অভূতপূর্ব রণকৌশলে পােল্যান্ড জয়ের মাধ্যমে শুরু হয়ে যায় এই মহাযুদ্ধ। এরপর বিশ্ব দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যায়; অক্ষশক্তি বনাম মিত্রবাহিনীর যুদ্ধ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। যুদ্ধ চলতে থাকে জলে, স্থলে, সাগরে এবং সমুদ্রতলদেশেও। রোমহর্ষক আর রক্তক্ষয়ী সব যুদ্ধে ইতিহাসের পাতা ভারী হতে থাকে। দশ লাখের বেশি প্রাণ হারানাের পর স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধকে ইতিহাস রেকর্ড করল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হিসেবে, কুরশকের যুদ্ধে বিশ্ব দেখল ইতিহাসের বিশালতম সাঁজোয়া (ট্যাংক) যুদ্ধ, ডি-ডেতে ইতিসের বৃহত্তম এম্ফিবিয়াস ল্যান্ডিং, আর হিরােশিমা ও নাগাসাকির বুকে প্রথমবারের মতাে অ্যাটম বােমা বিস্ফারিত হবার পর জাপানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে-এই মহাযুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর তারিখে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণকারী আর প্রত্যক্ষদর্শীদের কিছু সত্য ঘটনা দিয়েই সাজানাে হয়েছে এই সংকলন। ছয় বছরব্যাপী সংঘটিত এই যুদ্ধের ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে গল্পগুলাে ক্রমানুসারে সাজানাে হয়েছে। গল্পগুলােকে আরও আকর্ষণীয় করতে প্রতিটি গল্পে প্রাসঙ্গিক ক্যাপশনসহ ঐতিহাসিক ছবি সংযােজন করা হয়েছে। এছাড়াও সামরিক ইতিহাসের ভক্তদের কথা মাথায় রেখে অধিকাংশ গল্পের শেষে থাকছে পাদটীকা, যেখানে গল্প সংশ্লিষ্ট অভিযানের একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে। ধরা হয়েছে। হ্যাপি রিডিং!
পেশায় একজন সেনাসদস্য, তবে নেশায় একজন লেখক- ডেল এইচ খান সম্পর্কে এই বাক্যটি অত্যুক্তি হবে না। নিজের পেশাজীবনকে লেখালেখির সাথে যুক্ত করবার অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। তাঁর লেখা বই ‘আধুনিক দৃষ্টিকোণে সানজুর দ্য আর্ট অব ওয়্যার’ বইটির জন্য তিনি অর্জন করেছেন সেনাপারদর্শিতা পদক। অনলাইনে সিভি লেখার খুঁটিনাটির মতো ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়েও পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, একজন অভিজ্ঞ সেনাসদস্য হবার দরুন তিনি সেনাবাহিনীতে ভর্তিচ্ছুদের জন্য একটি ভর্তি সহায়ক বই ‘তোমাকেই খুঁজছে সেনাবাহিনী’ লিখেছেন, যা কি না বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। প্রকৃত নাম মোঃ দেলোয়ার হোসেন হলেও পাঠকসমাজের কাছে তিনি ডেল এইচ খান নামেই সুপরিচিত। ১৯৭৯ সালের ২৯শে নভেম্বর ঢাকা জেলায় জন্ম নেন ডেল এইচ খান। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমূহ মূলত ইতিহাসের বিভিন্ন বিখ্যাত যুদ্ধ, রণকৌশল, যোদ্ধাদের জীবনকাহিনী ইত্যাদিকে ঘিরেই রচিত হয়। ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা থেকেই বইয়ের বিষয় নির্ধারণ করেন তিনি। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমগ্র বর্তমান সময়ের প্রাসঙ্গিকতাকেও নির্দেশ করে, এক্ষেত্রে তাঁর ‘রোহিঙ্গা রঙ্গ’ বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস ও ভবিষ্যত, উভয় সময়ের বাস্তবতাকে নিয়েই বইটি রচনা করেছেন তিনি। তাঁর বইগুলো অনেক বেশি বিশ্লেষণাত্মক; বাস্তব তথ্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি বিশ্লেষিত গ্রন্থ উপহার দেন পাঠকদের, বর্তমানে বিশেষ ঘরানার পাঠক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর লেখনীর জন্য।