বাংলাদেশেল প্রাচীন সভ্যতা ও প্রত্নসম্ভারের অসামান্য দলিল এ গ্রন্থটি। দশকের পর দশক ধরে সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যেগে দেশব্যাপী পরিচালিত খন্দকার মাহমুদুল হাসান-এর প্রত্ন-অনুসন্ধান ফলাফল এতে বর্ণিত হয়েছে। এ গ্রন্থের সিংহভাগ জুড়ে আছে লেখক কর্তৃক আবিস্কৃত সম্পূর্ণ নতুন প্রত্নস্থল ও বিলুপ্ত নগরীসমূহের চিত্তাকর্ষক বর্ণনা। জাদুকরী ভাষার কল্যাণে প্রত্নকাহিনীগুলোই উঠে এসেছে গল্পের চেহারা নিয়ে। গ্রন্থটি পড়ার সময় পাঠক অনুভব করেন যে, তিনি নিজেই উপস্থিত আছেন প্রত্নস্থলসমূহে। লেখক নিজে প্রতিটি প্রত্নস্থলে গিয়ে নিদর্শনসমূহ দেখেছেন, বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেছেন। স্থানীয় অধিবাসীদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন, প্রচলিত জনশ্রুতি সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করেছেন, অবস্থান নকশা/ম্যাপ তৈরি করেছেন ও ছবি তুলেছেন। গ্রন্থটিতে ব্যবহৃত সব ছবি লেখকের ক্যামেরায় তোলা। এ গ্রন্থের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো প্রাচীন দিঘি, ঢিবি ও প্রত্নবস্তুসমূহের প্রাপ্তিস্থলগুলোর অবস্থান নকশা, যা দশকের পর দশক ধরে প্রত্নস্থলসমূহে ঘুরে ঘুরে লেখক নিজে তৈরি করেছেন। এসব নকশা/ম্যাপ ও ছবি এর আগে কোনো গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়নি। দুষ্প্রাপ্য দলিল-প্রমাণ, দুর্লভ ছবি ও বহুমূল্যবান অসংখ্য উদ্ধৃতি গ্রন্থটি সম্পদ। দৈনিক প্রথম আলো, সাপ্তাহিক ২০০০ ও মাসিক সায়েন্স ওয়ার্ল্ডসহ জাতীয়, পত্রিকা-সাময়িকীতে এ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত বেশিরভাগ অংশ ছাপা হয়ে পাঠক প্রিয়তায় ধন্য হয়েছে।
Khandokar Mahmudul Hasan খন্দকার মাহমুদুল হাসান। বাংলাদেশের প্রখ্যাত গবেষক ও শিশু-সাহিত্যিক। জন্ম ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ আগস্ট। তাঁর শতাধিক গ্ৰন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও সাময়িকপত্র বিষয়ক তাঁর মূল্যবান গবেষণাগ্রন্থসমূহ ব্যাপকভাবে প্ৰশংসিত। ছোটদের জন্যে তাঁর লেখা গোয়েন্দাকাহিনি, অ্যাডভেঞ্চার গল্প, রহস্যোপন্যাস, শিকার কাহিনি, ভয়- ভূতের গল্প, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, জীবনী, ইতিহাস ও বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থগুলো ঘরে ঘরে সমাদৃত। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই সাহিত্যিক সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে শিশুসাহিত্যের জন্য শীর্ষস্থানীয় সম্মাননা অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৪০৮ ও ১৪১১ বঙ্গাব্দ) ও এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার -২০১৪ । পশ্চিমবঙ্গ থেকে গল্পের জন্যে পেয়েছেন টুকলু পুরস্কার (যতীন্দ্রমোহন রায় স্মৃতি পুরস্কার ২০১৪)। এছাড়াও পেয়েছেন বাংলাদেশ সাহিত্য সংঘ সম্মাননা-২০০৮, স্বভাবকবি গোবিন্দচন্দ্ৰ দাস সম্মাননা, গাজীপুর-২০০৯), রকি সাহিত্য পুরস্কার-২০১০, গবেষক আবদুল হক চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, চট্টগ্রাম-২০১০; সম্মাননা-পেীর মেয়র ও প্যানেল মেয়র-২, বগুড়া-২০১২, সম্মাননা-এগারখান উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, যশোর-২০১৬ । তিনি বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, ইতিহাস সমিতি ও ইতিহাস একাডেমির সদস্য।