বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা লেখকের অন্তর্চেতনাই তাকে দিয়ে লিখিয়ে নেয় সেই সব ছবি যা তার মনের ভাজে ভঁজে আঁকা হয়ে থাকে। এই সংকলনে একুশটি গল্প আছে। প্রত্যেকটি আলাদা স্বাদের। বাস্তব জগৎ থেকেই লেখিকা আহরণ করেছেন সৃষ্টির প্রেরণাকে। প্রথম গল্প ‘প্রথম ফুল’ এক নারীর কষায় অভিজ্ঞতাজাত অপরূপ সম্পদলাভতার গর্ভজাত প্রথম ফুল। যাকে সে লালনের অধিকার পায় না আবার ধ্বংস করে দিতেও পারে না। ‘আকাশ অন্ধকার’ ‘কালাে রাজকন্যা’ ‘হৃদভূষণ’ বা ‘মায়াশশী’র মতাে অনেক গল্পই সমাজ সমস্যামূলক। এইসব সমস্যা থেকে যে সব আগুনের তির ছুটে আসে তার নিছক চিত্রণ করেননি লেখিকা। চেষ্টা করেছেন মানব মূল্যবােধের উজ্জীবন ঘটাতে। ঘৃণার উত্তরে ঘৃণা কিংবা হিংসার বদলে হিংসা উছলে উঠলে মানুষের জন্য আর কিছুই রেখে যাওয়া যায় না। তাই বােধহয় ‘মুক্তোদানা’‘ সত্যি নাটকের গল্প ’‘দূরের বন্ধু’ গল্পগুলি নির্মিত হয়। আনন্দকণা’ গল্পে ‘মনুষ্যত্বই মানুষের শ্রেষ্ঠ উপহার’ কিংবা বেঁচে থাকাটা জীবনের বড় কথা নিশ্চয়ই। তবে কীরকমভাবে বেঁচে আছি, সেটা আরও বড় কথা। এই সব উপলব্ধি লেখিকা তার গল্পগুলির মধ্য দিয়ে ব্যক্ত করেছেন দক্ষ লিপিকুশলতা নিয়ে।
বিনতা রায়চৌধুরীর জন্ম কলকাতায়। পড়াশোনা বেথুন স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি-এইচ ডি। হাওড়ার বিজয়কৃষ্ণ গার্লস কলেজের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের রিডার। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘পঞ্চাশের মন্বন্তর ও বাংলা সাহিত্য' (প্রবন্ধ), ‘ডানায় রৌদ্রের গন্ধ’, ‘তোমাকে ছুঁয়ে' (গল্প সংকলন), ‘অন্তবিহীন' (উপন্যাস), ‘ছকের বাইরে' (রহস্য উপন্যাস)।