“বহুরূপী কাইকর” বইটির ফ্ল্যাপঃ নীল শাড়ির সঙ্গে হাত ভর্তি লাশ চুরিতে তাকে লাগতাে। * দারুণ। চেহারাভর্তি পৃথিবী ভরা মায়া! পটের বিবি। হয়ে সবুজ ঘাসের ওপর আঁচল বিছিয়ে বসে থাকতে।। আশেপাশে যেন ভিড় না লেগে যায? সেই ভয়ে। থাকতাম। অমন চাঁদের মত সুন্দর দেখতে মানুষটাকে। কিছুক্ষণ না দেখে বেরসিকের মতাে হেঁটে চলে যাবে। কি করে কেউ। অপ্সরার দুষ্ট মিষ্টি হাসি আর ঘন কালাে চোখের ভুরু দেখে শহরের যে কোন ভন্ড প্রেমিক ভালাে হয়ে যাবে। এটা আমি বিশ্বাস করি। এতাে, এতাে ভালবাসার মাঝেও আমার ভয় হয়! খুব ভয় হয়। ইচ্ছা না থাকা সত্বেও অনিচ্ছায় বাস্টার্ট হয়ে জন্ম নেওয়াটা সে যেদিন জানতে পারবে। সে কি আমায? রেখে চলে যাবে! নাকি বুকের মধ্যে জড়িয়ে। আগলে ধরে রাখবে। কে জানে! তাই ভয় হয়।। কখনাে সখনাে মুখ চেপে এই ভেবে কাঁদি। ভালোবাসা। থাকাকালীন ভালােবাসা হারাবার ভয় যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তার সম্মুখিন কেউ না হলে বুঝবে না। বইটির প্রথমের কিছু অংশঃ আমার নাম কাইকর। বয়স বেশি না, সবেমাত্র পঁচিশ পেরিয়ে ছাব্বিশে পা দিয়েছি। এই তাে সেদিন, হাঁটুর তিন ইঞ্চি উপরে প্যান্ট পরে এলাকার মেয়েদের সামনে দিয়ে বুক ফুলিয়ে হাঁটতাম। আর এখন! লােম গজিয়েছে শরীরের এখানে সেখানে। ওহ..! আমার সম্পকে তাে পুরােপুরি বলাই হলাে না। এবার শশানেন, আমি হ্যাংলা-পাতলা, ছিমছিমে একটা ছেলে। গায়ের রঙ শ্যামলা কিন্তু গােলাকার মাথার চুলগুলাে খরগােশ প্রাণীর ন্যায়। অনেকে বলে খরগােশ মানব! নিজের গায়ের রঙ নিয়ে কখনাে চিন্তা করিনি। তবে, আমার চাপাভাঙা গালের এপাশে-ওপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কালােজিরার মতাে দাগ পড়েছে। এ নিয়ে আমি মােটেও চিন্তিত নই। কারণ, পুরুষদেহের আঁকার আকৃতি যেমনই হােক না কেন, থাকতে হবে জোর ও মনােবল। তবেই না যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রমণীদের কন্ট্রোলে রাখা যাবে। আমার গায়ের রঙটা শ্যামলা, মুখের রঙটা একটু কালাে আর ঠোটের রঙ? আমার সবচেয়ে খারাপ লাগে নিজেকে চকচকে কাঁচের আয়নার সম্মুখে দাঁড় করালে। কারণ, আমার ঠোটের রঙ আফ্রিকান নিগ্রো মানুষদের মতােই। কালাে। আমি আমার ঠোটের মাঝে আফ্রিকানদের খুঁজে পাই। আমার মনধর্মে রূপচর্চা নামে কোনাে অভিধানিক শব্দ নাই। মাঝে মধ্যে মন চাইলে অজগর সাপের ন্যায় জিহ্বা বের করে ঠোটগুলাে লেপে দিই খানিকটা রঙ বদলাবার আশায়। তবে এ যে বৃথা চেষ্টা তা আমি জানি। নামি-দামি ব্র্যাণ্ডের প্রসাধনী সামগ্রীর চেয়ে আমার জিহবার লালা পানি কম কিসে। যাইহােক, এতােক্ষণ অব্দি নিজের সম্পকে আগুড়ম-বাগুড়ম অনেক কথায়। বললাম। এবার আরেকটু নিজ সম্পর্কে বর্ণনা দেই। এবার তবে শরীরের বর্ণনা না দিয়ে বর্ণনা দিবাে মনের। প্রকৃতির কোনাে গাছই দীর্ঘকাল এক থাকে না। গাছ বছরের একেক ঋতুতে একেক রূপ নেয়। এক ঋতুতে সম্পূর্ণ পাতা ঝরে পড়ে নগ্ন হয়ে অন্য ঋতুতে নগ্ন শরীর ডাকে। একটা সময়ে ফুল দেয়, অন্য সময়ে ফল। সেই ফল কিছু সময় দীর্ঘায়ু হয়ে, হয় নিজ ইচ্ছেতে ঝরে পড়ে না হয় অনিচ্ছায়। তবে, তাকে রূপ বদলাতে হয়।
পৃথিবীর কষ্ট বোঝার জন্য লেখকদের সংগ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। আগুনে পুড়ে,পুড়ে পরিণত হয়েই একজন লেখক মানুষের অনুভূতিগুলোতে আটকে দিতে পারে শব্দের বুননে। দুঃখই লেখকের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণার জায়গা। লেখক আব্দুল্লাহ আল মামুনের কষ্টের সাথে সুসম্পর্ক। জীবনের চোরা গলিতে ছুটতে ছুটতে কালো আর আলোকে চেনা সহজ হয়ে উঠেছে তার জন্য। নাটক, সিনেমার চিত্রনাট্য , গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, সমসাময়িক ও গ্লোবাল বিষয় নিয়ে কলাম লিখে আর বাংলাদেশ টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ সময় সহকারী, প্রধান সহকারী পরিচালক ও এসোসিয়েট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে এর মাঝেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। বর্তমানে তিনি পিয়ানো কোম্পানির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে আছেন। পাশাপাশি স্টার্টআপ বিজনেস নিয়ে তার ভাবনা অতুলনীয়। একজন তরুণ উদ্যোক্তা। লেখক পরিচিতি লেখকের ভাষ্যমতে এমন — ' ছোট ছোট শব্দ জোড়াতালি দিয়ে বিক্রি করে লাখপতি হয়েছি। খুব দ্রুত যেন কোটিতে পা দিতে পারি সেই দোয়া রাখবেন। ' ' আমি শব্দ বিক্রি করে খাই, মানুষ না। '