"জেলে ত্রিশ বছর" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ‘আমার স্বপ্ন সফল হয় নাই, -আমি সফলকাম বিপ্লবী নই। আমার ব্যর্থতার কারণ, আমার দূর্বলতা নয়। আমি কখনও ভীরু ছিলাম না-আমার জীবনে কখনও দুর্বলতা দেখাই নাই। আমি আমার চরিত্র নির্মল ও পবিত্র রাখিতে সক্ষম হইয়াছি। অর্থলােভ আমার ছিল না। এই সময় হাজার-হাজার টাকা আমার হাতে আসিয়াছে, কিন্তু সে টাকা নিজের ভােগবিলাসিতার জন্য ব্যয় করি নাই। সেই সময়ও আমি রাস্তা-ঘাটে চলা ফিরার সময় চিড়া-মুড়ি খাইয়াছি, যতটা সম্ভব পায়ে হাঁটিয়াই চলিয়াছি-গাড়ি-ঘােড়া চড়ি নাই । মৃত্যুভয় আমার ছিল না, যে কোন বিপদজনক কাজে হাত দিতে আমি পশ্চাৎপদ হই নাই। আমার স্বাস্থ্য ভাল ছিল, আমি কখনও অলস ছিলাম না, কঠিন পরিশ্রমের কাজে কখনও ভীত হই নাই, যখন যে কাজ করিয়াছি, আন্তরিকতার সহিতই করিয়াছি। আমার ব্যর্থতার কারণ পারিপার্শ্বিক অবস্থা, আমার ব্যর্থতার কারণ একজন দক্ষ ও সফলকাম বিপ্লবীর যতটা ধীশক্তি ও জন-গণ-মন অধিনায়কতার যে ব্যক্তিত্ব থাকা আবশ্যক তাহার অভাব। এসব কথা বলেন, মহারাজ তথা ত্রৈলােক্য নাথ চক্রবর্তী যিনি ত্রিশ বছর জেল খেটেছেন, সাধারণ কয়েদী, বিশেষ শ্রেণী, সশস্ত্র বিপ্লবী, স্টেট-প্রিজনার, ভেটিনিউ, সিকিউরিটি বন্দী ছিলেন না জেলে। এমনকি কালা পানি আন্দামান জেলেও। তাঁর লেখা সে সময়ে জেল, বিপ্লব, আন্দোলন ও তার বিপ্লবী সাথী ও ব্রটিশ থেকে পাক-ভারত স্বাধীনতার এক প্রামান্য দলিল এ গ্রন্থ।