“কথুলহু : লভক্রাফটিয়ান থ্রিলার” বইটির প্রথম অংশের কিছু কথাঃ পুরুষরাই তাদের সমস্যার কথা বাইরের কাউকে জানাতে বেশি সংকোচ বােধ করে। সাইকিয়াট্রিস্ট হিসেবে জিয়াকে এখন ধৈর্য ধরে তার রােগীকে সাহায্য করতে হবে যাতে সে জড়তা কাটিয়ে দ্রুত তার সমস্যার কথা খুলে বলতে পারে। রুটিন একটা কাজ, কিন্তু জিয়া কখনােই থেরাপির এই অংশটুকু এনজয় করেন , বরং বিরক্তি লাগে। ইদানীং আসলে তার রােগী দেখার কাজটাই বিরক্তিকর লাগছে। বয়স হয়ে যাচ্ছে তাে, প্রায় পঞ্চাশ হতে চলল। এটা এমন একটা বয়স-যখন জগৎ সংসারের সবকিছুর ওপর একধরনের বিরক্তি এসে যায়। নিজের শখের কাজটাও একঘেয়ে মনে হতে থাকে। তাছাড়া বহুদিন ইন্টারেস্টিং কোনাে কেস পাচ্ছেন না। জিয়া তার কণ্ঠে বিরক্তিটুকু আড়াল করে জানতে চাইলেন, “ঘুম ভেঙে যায় কেন?” “ওই যে বললাম, দুঃস্বপ্ন দেখি।” ছেলেটি নখ খুঁটতে খুঁটতে উত্তর দিল। জিয়া মনে মনে হতাশ হলেন। দুঃস্বপ্ন। ধ্যাত...আরাে একটা টিপিক্যাল কেস। নাহ আসলেই এবার একটা লম্বা বিরতি নেওয়া দরকার। নিজের মনকে ফ্রেশ করতে হবে। দূরে কোথাও থেকে বেড়িয়ে আসা যেতে পারে। ফ্রান্স অথবা গ্রিস...আসলে বয়স মানুষকে বুড়াে করে না, মানুষ বুড়াে হয়ে যায় একঘেয়েমির কারণে। তিনি বেশ কিছুদিন থেকেই চরম একঘেয়েমিতে ভুগছেন। এই মনােভাব থেকে জলদি বের হতে হবে। জিয়া চোখ থেকে চশমা খুলে এনে পরিষ্কার করতে করতে জিজ্ঞেস করলেন, “কী ধরনের স্বপ্ন?” ছেলেটি মাথা চুলকে বলল, “ভীষণ ভয়ের স্বপ্ন। দেখে খুব ভয় লাগে। কিন্তু জেগে ওঠে আর কিছু মনে করতে পারি না।” “হুমম...কোনাে ঘুমের ওষুধ খেয়ে দেখেছেন?” “হ্যা...আমার এক ডাক্তার বন্ধুর কথা শুনে মিডাজোলাম খেয়েছি কয়েকদিন। কাজ হয়নি।” মিডাজোলাম খুব পাওয়ার ফুল ওষুধ। ১৫ মিলির মিডাজোলাম দিয়ে একটা তেজি ঘােড়াকেও বেহুশ করে দেওয়া যাবে। অথচ এই ছেলে বলে কিনা মিডাজোলাম গিলেও তার ঘুম গভীর হয়নি! জিয়া এবার একটু নড়েচড়ে বসলেন। | ছেলেটির নাম জহির রায়হান, বয়স ছাব্বিশ। যদিও চেহারা দেখে সেটা। অনুমান করার উপায় নেই। জহিরের মাথায় কবি সাহিত্যিকদের মতাে লম্বা চুল, সেটা আবার মাথার তালুতে জটা পাকানাে। মুখ ভর্তি খোঁচা খোচা দাড়ি, তাতে একটু একটু পাক ধরেছে। তুবড়ানাে গাল আর কপালের ভাজ, সাথে কাচাপাকা
"লেখকের জন্ম ঢাকা শহরে ১৯৮৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এই শহরেই তার বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা করেছেন নটরডেম কলেজের ব্যাবসায় শিক্ষা অনুষদ থেকে। পরবর্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনিতি বিভাগে স্নাতক করেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আছেন। তিনি লেখালিখি শুরু করেন ব্লগিং এর মাধ্যমে। পরবর্তীতে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকাতেও ফিচার রাইটার হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি লেখালিখির পাশাপাশি শখের ইউটিউবিং এবং ওয়েব শো নির্মাণ করছেন। “কথুলহু” তার প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস। "