“আপেক্ষিকতার তত্ত্ব" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ আইনস্টাইন কর্তৃক আপেক্ষিকতার নীতি প্রস্তাবিত হবার পরে একশত বছরের বেশি অতীত হয়ে গিয়েছে। এই নীতি অনেকের কাছে প্রথমে নিছক মনের একটি খেয়াল বলে মনে হয়েছিল; এখন তা পদার্থবিজ্ঞানের একটি ভিত্তিপ্রস্তর বিশেষ। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান যেমন অণু এবং পরমাণুর ধারণা ব্যতীত টিকে থাকতে পারে না তেমনি এই বিশেষ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব ব্যতীতও এর অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পদার্থবিজ্ঞানের অজস্র ব্যাপার আছে যা আপেক্ষিকতার তত্ত্ব ভিন্ন কখনও ব্যাখ্যা করা যেত না। বস্তুকণা ত্বরক (Particle accelerators) এবং পারমাণবিক প্রতিক্রিয়ার (nuclear reactions) হিসাব এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই হয়। তবে দুঃখের বিষয় বিশেষজ্ঞদের সংকীর্ণ চক্রের বাইরে আপেক্ষিকতার তত্ত্বটি অল্পই পরিচিত। তত্ত্বটি কঠিন, একথা সত্য। এবং পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নবাগত কেউ এর প্রয়ােজনীয় দিকগুলাে বুঝতে কষ্ট বােধ করবেন। আমরা আশা করি যে সাধারণ পাঠকের কাছে আমরা আপেক্ষিকতার তত্ত্বের মূল বিষয়গুলাে যথেষ্ট স্বচ্ছ এবং সরলভাবে উপস্থাপিত করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা এটাও আশা করি যে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব বলতে “জগতের সব কিছুকেই আপেক্ষিক” বলে পাঠক মনে করবেন না, বরং তিনি নিশ্চিতভাবে এটা উপলব্ধি করবেন যে, পদার্থ বৈজ্ঞানিক অন্য যে কোনাে নির্ভুল তত্ত্বের মতােই আপেক্ষিক তত্ত্বও বস্তুগত সত্য বিষয়ে এমন একটি শিক্ষা যা সকলের ইচ্ছা এবং রুচি নিরপেক্ষ। দেশ, সময় এবং ভর (space, time and mass) সংক্রান্ত পুরনাে ধারণা বর্জন করে জগতের সত্য প্রকৃতি সম্বন্ধে আমরা আরও গভীর অন্তদৃষ্টি লাভ করেছি।