বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা পুরুষ শাসিত সমাজে পুরুষরা নির্যাতনের শিকার কথাটা বেমানান মনে হলেও, সত্য! সমাজ বিবর্তনের সাথে সাথে নারী নির্যাতন যখন হ্রাসমুখী। তখনি নতুন আঙ্গিকে সমাজে বিস্তার করতে শুরু করেছে পুরুষ নির্যাতন। বােধকরি পুরুষ নির্যাতন শব্দটি স্বীকার কবার মানসিকতা এখনও মানুষের তৈরি হয়নি। অনেকেই মনে করেন নির্যাতিত পুরুষ মানেই কাপুরুষ, অকর্মন্য সর্বপরী হাস্য-রসের পাত্র। একারণে পুরুষরা নির্যাতিত হয়েও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। নারী কর্তৃক নির্যাতিত হওয়া মানেই পুরুষের জীবন বৃথা। নির্যাতিত পুরুষের কেউ শারিরিক, কেউ মানসিক, কেউ আর্থিক, কেউ সামাজিকভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পর্যবেক্ষণ চালালে দেখা যাবে অনেক পরিবারে পুরুষের উপর মানসিক নির্যাতনের কারণে সংসারে অশান্তি, নিপীড়ন, নির্যাতন লেগেই আছে। সমাজ দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বদলে যাওয়ারই সময় এখন। বদলে যাওয়া সমাজে নতুন করে যুক্ত হয়েছে পুরুষ নির্যাতন। তুলনামূলক কম হলেও নির্যাতিত পুরুষের সংখ্যা এদেশে নেহাত কম নয়। সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকার কারণ- মানবাধিকার সংস্থাগুলাে এ বিষয়ে দায়হীনতার পরিচয় দিচ্ছে। জানামতে, শাহ্ গওছল আযমই প্রথম প্রতিবাদী হয়ে ‘পুরুষ নির্যাতন প্রতিরােধ সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন এবং রংপুর থেকে প্রকাশ করেছিলেন লিটলম্যাগ ‘বিপ্রতীপ। লিটলম্যাগটি পরবর্তীতে ‘পুরুষ’ নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। মহামূল্যবান এই বইটি নতুন করে প্রকাশের উদ্দেশ্য কাউকে আঘাত করা, উস্কে দেয়া কিংবা নারী বিদ্বেষ প্রকাশ নয়। বরং যে মুক্তচিন্তা থেকে সমাজ উপকৃত হয় সে চিন্তাকে সমাজের হাতে তুলে দেয়া। বইটি প্রকাশ হলে মানুষ সচেতন হবে, সমাজ উপকৃত হবে। বইটি প্রকশ করতে গিয়ে লেখক পরিবারের সাথে যােগাযােগের চেষ্টা করেও তার ছবি কিংবা জীবন বৃত্তান্ত পাওয়া যায়নি, এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যেহেতু বইটি ৩০ বছর আগের প্রকাশিত অবস্থার অনুরূপ প্রকাশ করা হলাে। এতে তথ্যগত যে কোন অসংগতি দৃষ্টি গােচর হলে আমাদের অবগত করার জন্য বিজ্ঞ পাঠকদের বিনীত অনুরােধ। সুনির্দিষ্ট তথ্য অবহিত করলে আমরা প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবাে। অনেক প্রতিকূলতাকে পাশকাটিয়ে বইটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।