বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ বাংলাদেশে নতুন হেডকোয়ার্টার : গভীর আগ্রহে ফলকটা দেখতে দেখতে কিশাের বলল, ‘একটা বানর, লেজটা গােড়ার কাছে কাটা, আরও কিছু রেখা এদিক ওদিক চলে গেছে। মুখ তুলে পিন্টোর দিকে তাকাল সে। তােমার ধারণা এই রেখাগুলাে গুপ্তধনের নকশা? শিকারি বাজ : বাড়িটাতে বেশ কয়েকটা ঘর। সবগুলােই সুন্দর করে সাজানাে। শােবার ঘর আর রান্নাঘর দেখে বােঝা গেল তড়িঘড়ি এখান থেকে পালিয়েছে কয়েকজন লােক । সিংকে এঁটো প্লেটের স্তুপ। আলমারির ড্রয়ার আর দরজাগুলাে খােলা। ফিরে তাকিয়ে সঙ্গীদের আসতে ইশারা করল কিশাের। কানা কুমিরের গুপ্তধন : শটগানের গুলির শব্দ শােনার মিনিটখানেক পর ঘাসের জঙ্গলে ঢুকেছিল রবিন। কোমরসমান উঁচু ঘাসের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে এখন। সঙ্গীদের কাউকে চোখে পড়ছে না। পানিতে একটা কাঠের টুকরাে ভাসতে দেখে তুলে নিল। একটা দাঁড়ের অর্ধেকটা। হুস করে পানির ওপর মাথা তুলল এক বিশাল অ্যালিগেটর। মস্ত হাঁ করে রবিনকে গিলতে এল ওটা। মরুদস্যু : হঠাৎ সামনে আধমাইল দূরে মস্ত একটা কালচে আঙুল যেন কালাে চাদর ফুঁড়ে বেরিয়ে এসে খোঁচা মারল মাটিতে। তারপর বলের মতাে ড্রপ খেয়ে উঠে যেতে লাগল আবার। আবার নামল। লাফাতে লাফাতে এগিয়ে চলল একটা সাইনবাের্ডের কাছে। আওতায় পেয়েই হ্যাচকা টানে বাের্ডটাকে তুলে সেঁধিয়ে ফেলল পেটের মধ্যে। বােরজিয়া ড্যাগার : পারলারে স্তব্ধ নীরবতা। থমথমে পরিবেশ। সবাই যেন শুনতে পাচ্ছে নিজেদের হৃৎপিণ্ডের ধুকপুকানি। বিছানায় পড়ে আছে দুটো লাশ। মরার আগে নিজের নিয়তি বুঝতে পেরে আতঙ্কিত হয়েছিল একজন। বড় বড় হয়ে গিয়েছিল চোখ । তার কপালে ছুরি দিয়ে কেটে একটা অক্ষর, ‘বি’ লিখে দিয়েছিল ম্যারিজল। ‘বি’ বােরজিয়ার নামের আদ্যাক্ষর। নাকি ব্যাড বােঝাতে চেয়েছিল সে-ই জানে। এরপর থেকেই গুজব রটে যায়, ওই ছুরিটার মালিক যে-ই হবে, ছোঁয়ার চার মাসের মধ্যেই অপঘাতে মৃত্যু হবে তার। ক্যারাবিয়ানের জলদস্যু : ‘এক রাতে, দম নিয়ে আবার শুরু করলেন বৃদ্ধা, “ঠিক আজকের রাতের মতােই সুন্দর ছিল রাতটা। সৈকত ধরে হাঁটছিল মনিকা। হঠাৎ গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে মনিকার পথ আটকে দাঁড়াল কয়েকজন জলদস্যু। গলার হারটা চাইল । কিন্তু হারটা এতই পছন্দের ছিল মনিকার, কোনােমতেই দিতে রাজি হলাে না ও। পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল। তারপর যা ঘটল, বলতেও কষ্ট হচ্ছে আমার। এত সুন্দর মেয়েটাকে খুন করল ডাকাতরা। রহস্যটা আজও রহস্যই রয়ে গেছে।' থিম পার্কে মহাবিপদ : সাউথ ক্যারােলিনার অত্যাধুনিক থিম পার্কে তদন্ত করতে গিয়ে বিপাকে পড়ল মুসা। ছুটে গেল কিশাের ও রবিন। রাতে ওরা পৌছানাের পর থেকেই ঘটতে শুরু করল নানা অঘটন । সূচিপত্রঃ বাংলাদেশে নতুন হেডকোয়ার্টার শিকারি বাজ কানা কুমিরের গুপ্তধন মরুদস্যু বােরজিয়া ড্যাগার ক্যারাবিয়ানের জলদস্যু থিম পার্কে মহাবিপদ
রকিব হাসান বাংলাদেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের স্রষ্টা ও কিশোর-কিশোরীদের সেরা পছন্দের লেখকদের শীর্ষ তালিকার একজন। তাঁর মাধ্যমেই বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীরা গোয়েন্দা কাহিনি ও তিন গোয়েন্দা সিরিজের সাথে পরিচিত হতে থাকে। শুধু তাই নয়, তিনি বহু ক্লাসিক ও কিশোর রোমহর্ষক সিরিজের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক। লেখালেখির দীর্ঘ ৫০ বছরে চারটি প্রজন্ম অতিবাহিত হলেও আজও তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি। মূলত তিনি নিজেকে আড়ালে রাখতে পছন্দ করেন বিধায় মিডিয়ায় তাঁর উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবুও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে দেশ বিদেশে তাঁর লক্ষ লক্ষ পাঠকশ্রেণি রয়েছে। যাদের ছেলে-মেয়ে-নাতি-নাতনী এবং পরবর্তী প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের কাছেও রকিব হাসান অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখক। বর্তমান প্রজন্মের পাঠক-ভক্তদের কাছেও ‘তিন গোয়েন্দা সিরিজটি’ এবং ‘কিশোর, মুসা, রবিন’ চরিত্রটি অসম্ভব জনপ্রিয়। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও কিশোর-কিশোরীসের সেরা পছন্দের এই গুণী লেখকের জন্ম কুমিল্লায়, ১৯৫০ সালে। মূলত এক সময়ে পাঠকের হাতে স্বল্পমূল্যে বই তুলে দিতে এবং নিত্য নতুন পাঠক সৃষ্টি করতে ‘পেপারব্যাক সংস্করণে’ প্রকাশিত স্বনামে-বেনামে তাঁর লেখা বহু বই তিন দশক ধরে বেস্টসেলার ও জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিল। আজও তাঁর প্রকাশিত বইগুলো সমান জনপ্রিয়তার শীর্ষে। সকল কিছুকে ছাপিয়ে তাঁর ‘তিন গোয়েন্দা সিরিজটি’ এবং ‘কিশোর, মুসা, রবিন’ চরিত্র কালজয়ী জনপ্রিয়তা লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। স্বনামে-বেনামে ও ছদ্মনামে এই তিন ক্যাটাগরিতেই তাঁর জনপ্রিয়তায় কোন ছেদ পড়েনি। তিনি সকল ধরনের মিডিয়া ও প্রচার প্রচারণাকে এড়িয়ে চলতে পছন্দ করতেন বলে অত্যন্ত জনপ্রিয় এই লেখকের ফেসটি তেমন পরিচিত নয়। কিন্তু আমরা বাস্তবতায় দেখেছি যে, যখন কোন পাঠক একটু জানতে পেরেছেন যে, রকিব হাসান বইমেলায় অমুক প্রকাশনীতে আছেন, তখন একে একে নিমিষেই প্রচÐ ভীড়ের সৃষ্টি হতো। এমনকি পাঠকের ভীড়ে তাঁকে খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে যেতো। এই গুণী লেখকের প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় পাঁচ শতাধিক। তাঁর লেখা প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৭৭ সালে, ছদ্মনামে। স্বনামে প্রথম প্রকাশিত বইটি ছিল অনুবাদগ্রন্থ, ব্রাম স্টোকারের ‘ড্রাকুলা’। এরপর অনুবাদ করেছেন জুল ভার্ন, জিম করবেট, কেনেথ অ্যান্ডারসন, মার্ক টোয়েন, রবার্ট লুই স্টিভেনসন, হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড, ফ্রেড জিপসন, রেনে জুঁইঅ, এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল-এর মত বিখ্যাত লেখকদের অনেক ক্লাসিক বই। অনুবাদ করেছেন মহাক্লাসিক ‘অ্যারাবিয়ান নাইটস’ ও এডগার রাইস বারোজ- এর ‘টারজান’ সিরিজ। তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়েছে ছোটদের নিয়ে রচিত ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজটি। এই সিরিজের তিনটি মূল চরিত্র ‘কিশোর-মুসা-রবিন’কে নিয়ে লিখেছেন আরও তিনটি সিরিজ ‘তিন বন্ধু’, ‘তিন কিশোর গোয়েন্দা’ ও ‘গোয়েন্দা কিশোর মুসা রবিন’। লিখেছেন ‘কিশোর গোয়েন্দা’ সিরিজ ‘খুদে গোয়েন্দা’ সিরিজ, জাফর চৌধুরী ছদ্মনামে ‘রোমহর্ষক’ সিরিজ এবং আবু সাঈদ ছদ্মনামে ‘গোয়েন্দা রাজু’ সিরিজ। এ ছাড়া কিশোরদের জন্য বেশ কিছু ভূতের বই ও সাইন্স ফিকশনও লিখেছেন তিনি। তাঁর লেখা কিশোর-কিশোরীদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে এবং সেরা বিনোদন যোগায়। আমরা এই গুণী ও অত্যন্ত জনপ্রিয় লেখকের সুস্থ জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। মহান আল্লাহপাক আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করুন। আমীন।