অ্যালবামের প্রথম চারটা ছবিই আমার খুব চেনা। এখানকার তিনটা ছবি দিয়ে আমার ছবি তােলার হাতেখড়ি। ছবির ওপর কমলা রঙে তারিখ লেখা না থাকলেও বলতে পারতাম এগুলাে ১৯৯১ সালের জানুয়ারি মাসে তােলা। আমার বয়স তখন তেরাে। প্রথম ছবি আমার দুই যমজ বােনের। মেঘনা আর চিত্রা। আমার বাবা নদীর নামে দুই মেয়ের নাম দিয়েছেন। ওদের বয়স তখন সাড়ে তিন বছর। একই ডিজাইনের কিন্তু ভিন্ন রঙের ফ্রক পরে দুজন চোখ বড় বড় করে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে আমার মা-বাবার ঝাপসা মুখ। দুজনেই বিষন্ন। তার এক মাস আগেই দেশে আওয়ামী লীগ-বিএনপি এক জোটে আন্দোলন করে প্রেসিডেন্ট এরশাদকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। সেই আন্দোলনের ঢেউয়ে আমার ক্লাস সেভেনের ফাইনাল পরীক্ষা বানচাল হয়ে গেছে। দীর্ঘ ছুটি ভােগ করে বিনা পরিশ্রমে ক্লাস এইটে উঠে গিয়েছি। ছােটচাচার সঙ্গে জাদুঘর, সােনারগাঁও, লালবাগের কেল্লা দেখে ভালােই সময় কাটাচ্ছিলাম। দেশে গণতন্ত্র ফেরত এসেছে, এই নিয়ে বাবাকেও দেখতাম খুব আনন্দে আছে। অফিস থেকে বাড়ি ফিরেই ক্যাসেট প্লেয়ারে পুরােনাে বাংলা গান বাজিয়ে গুনগুন করে সুর মিলাতাে। মা সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় নতুন নাস্তা বানানাের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যস্ত থাকত।
পেশাদার গবেষক, পরামর্শদাতা, উদ্যোক্তা। জন্ম খুলনায়, ১৯৭৯ সালে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। আগ্রহের বিষয় সাহিত্য, মনস্তত্ত্ব, নৃতত্ত্ব আর ইতিহাস। ২০১৮ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস নক্ষত্রের নিচে প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন ১৯৯০ সাল থেকে। বাঙালি পাঠকের জন্য ইতিহাস-বিষয়ে সরল ভাষায় লেখালেখি করার জন্য কয়েক বছর ধরে পড়াশোনা করছেন, ঘুরে দেখেছেন দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু ইতিহাস-প্রসিদ্ধ জনপদ। বাতিঘর প্রকাশিত তাঁর বই মধ্যযুগের বাংলা: বখতিয়ার খিলজি থেকে সিরাজ-উদ্-দৌলা পাঠকপ্রিয় হয়েছে।