নয়া-উপনিবাসের ভদ্দরলোকী সমাজ 'চাড়াল' শব্দখানি গালি অর্থে ধার্য করিয়াছে। অপর অর্থে জাতপাতহীন। অন্তত বাংলাদেশে কথ্য কথায় চাড়াল বলিয়া এমন সব আদমিদের বুঝাইয়া থাকে যাহাদের কোন ভাষা নাই। ইহাদের রুচিও অরুচিকর। কমাইয়া বলিলে ইহা রুচির বালাই। ভাষা থাকিলেও ভদ্দরলোকী সমাজে ইহাদের রুচি আর ভাষার ভাব শূন্যের কোঠায়। ক্ষমতাকাঠামোর তলায় অবস্থান করিতেছে ইহারা। কহতব্য ভব্য বা সুশীল সমাজে ইহা উন-আদমিকে বুঝাইয়া থাকে। চলতি অভিধানে ইহার অর্থ অনর্থ হিসাবে থাকিতেছে। বর্ণবাদী ভদ্দরলোকী সমাজে চাড়ালের ভাষা বিষধর জন্তুর বিষতুল্য পদার্থ। আহা ভদ্দরলোকদিগের রুচির বৈকল্য আর কাহাকে কহিব! প্রশ্ন জাগিতেছে, আমরি বাংলাভাষা জানিয়া শুনিয়া বিষ খাওয়াইলা কোথায়? এই হেন ভদ্দরলোকদিগের? বুঝিলাম চাড়াল নামীয় জন্তু বা আদমির ভাষা বিষ? জানিয়া শুনিয়া আজি আমরা বিষই খাইলাম। রুচির সহিত গাত্রবাহিত বর্ণ বা পদার্থ বহাইলাম আমরা। আর ভাষার প্রাণচাঞ্চল্য বাড়িয়া উঠিল। বাড়িয়া উঠিল ঠাটও। হইয়া উঠিল নববিধান চাড়ালি ভাষা। আমরা চাড় ভাবের সহিত মাত্র আলি যোগ করিলাম। আর হরিচরণ মহাশয় কিঞ্চিত সহায় হইয়া বিশদাশয় ধরিলেন। কহিলেন সহেলি সহেলি! ইহাই চাড়ালনামা।
১৯৭২-এ নাসির আলী মামুন বাংলাদেশে পােট্রেট ফটোগ্রাফির সূচনা। করেন। আমাদের কালের শ্রেষ্ঠ মানুষদের বিভিন্ন দুর্লভ মুহূর্তগুলাে। অত্যন্ত পারদর্শিতার সঙ্গে ধরে রেখেছেন আলােকচিত্রে এবং তার । ক্যামেরায় ধারণ করা খ্যাতিমানদের পােট্রেটের আলাে-আঁধারের | ঐশ্বরিক স্পর্শ তাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সুনাম এনে দিয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাকার গ্রহণের অভিনবত্বের পাশাপাশি ঘর। নাই' শিরােনামে তাঁর নেয়া গৃহহীনদের সাক্ষাঙ্কার সিরিজটি বাঙালি। পাঠকদের বিশেষ আগ্রহের বিষয়। এক্ষেত্রে তিনি এক নতুন ঘরানার। জন্ম দিয়েছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ ১০টি। দেশে ও বিদেশে একক। আলােকচিত্র প্রদর্শনীর সংখ্যা ৫৩টি। একাধিকবার ভ্রমণ করেছেন। ইউরােপ-আমেরিকার বহু দেশ। আলােকচিত্রে বন্দি করেছেন। সেইসব দেশের অনেক বরেণ্য ব্যক্তিকে। 'ফটোজিয়াম’ নামে। ফটোগ্রাফির জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। ১৯৫৩-। এর ১ জুলাই ঢাকায় নাসির আলী মামুনের জন্ম ।