সবকিছু আকড়ে ধরে থাকতে নেই। ভুল ভাঙানোর প্রয়োজনও ফুরিয়ে যায় একসময়। *একটা বয়সের পর পুরুষদের আর নিজের বলে কিছু থাকেনা। তার ঘরটা আমূল বদলে যায় প্রিয়তমার ইচ্ছেতে। বিছানার চাদর, বালিশ, আলমিরা, চেয়ারে রং আর ধরণ বদলায়। এমনকি বদলে বুক শেলফ্ এর জায়গায় চলে আসে ড্রেসিং টেবিল! একটা বয়সের পর পুরুষরা অন্যদের জন্য ছোটে। সামাজিক চাপে পড়ে নিজের স্বপ্নটার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে প্রচন্ড কষ্ট নিয়ে চাকরিটা করে যায়। তাকে বোঝার কেউ থাকেনা। পরিবার তার সময় চায়। মা,বাবা পরিবারের সবাই যেনো অবুঝ হয়ে ওঠে কিছুটা। বড় হবার দোষে চাপিয়ে দেয় সকল দায়িত্ব! এই পরিশ্রম, জীবনের জন্য ছুটে চলা সবকিছুকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নিয়ে আরো কিছুটা চাওয়া পাওয়া বাড়িয়ে দেয় চারপাশের সবাই। কেমন অন্ধ হয়ে, স্বার্থপরের মতোন তাদের এই চাওয়া পাওয়ার হারালে আড়ালে হারিয়ে যায় পুরুষদের বেদনার বেনোজলে ভেসে আসা কথাগুলো। কেউ বোঝেনা, বুঝতে চায়না। একটা বয়সের পর কোনো পুরুষ আর নিজেদের জন্য কাঁদেনা। তাদের কান্নাও অন্যদের জন্য। পুরুষ হলে কাঁদতে নেই। কাঁদার জায়গাও নেই। এভাবেই পুরুষ প্রেমিক, স্বামী, বাবা, দাদা হবার পর একদিন খুব ক্লান্ত হয়ে বুড়িয়ে যাওয়া শরীরটা নিয়ে মরে যায়। দুর্বল ঘাস হয়, বিষন্ন পাখি হয়। আচ্ছা একটা বয়সের পর মেয়েদের ক্ষেত্রে কেমন হয়? তাদের কষ্টগুলো কী এমনই নাকি অন্যরকম?
কিঙ্কর আহ্সান এর জন্ম ১৯৮৯ সালের ৬ জুলাই কুষ্টিয়া জেলায়। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগে। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে সক্রিয় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেখক সংঘ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, কন্ঠশীলন, মুক্তআসর, বিল্ড বেটার বাংলাদেশসহ আরও অনেকগুলো সংগঠনের সাথে। লেখালেখির শুরু তার দেশের একটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে। টানা পাঁচ বছর বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কন্ঠ, বাংলানিউজ, পরিবর্তনসহ দেশের প্রায় সব শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে লেখালেখি করেছেন। ছোটগল্প লেখার পাশাপাশি কালের কন্ঠের 'বাতিঘর' পাতায় শিক্ষানবিস সাব এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। সহকারী স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কাজ করেছেন 'কে হতে চায় কোটিপতি' টিভি শো'তে। পাশাপাশি 'মার্কস অলরাউন্ডার', 'হাসতে মানা', 'হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান পাওয়ার্ড বাই বাংলাদেশ নেভী' ও 'বাংলাদেশ সুপার লীগ-গ্রান্ড লোগো আনভেইলিং' এর প্রধান স্ক্রিপ্ট রাইটার ছিলেন। এই স্বল্প সময়ের সৃজনশীল ক্যারিয়ারেও বেশ সাড়া ফেলেছে কিঙ্কর আহ্সান এর বই সমগ্র। লেখালেখির পাশাপাশি ফিল্মের কাজেও জড়িয়েছেন এই লেখক। 'পাতার নৌকা', 'ক্রিং ক্রিং' ও 'জলপরানি' টেলিফিল্মের কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অনেকের। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাথে ডকুমেন্টারি নির্মাণের কাজ করেছেন। কাজ করেছেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বিজ্ঞাপন সংস্থায়। সবকিছুর পরও যেন লেখালেখিই কিঙ্কর আহ্সান এর আসল জায়গা। বইমেলায় প্রকাশিত 'আঙ্গারধানি', 'কাঠের শরীর', 'রঙিলা কিতাব', 'স্বর্ণভূমি', 'মকবরা', 'আলাদিন জিন্দাবাদ' ইত্যাদি কিঙ্কর আহ্সান এর বই সমূহ, যা বেশ পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে।