"বিভ্রম" বইয়ের ভূমিকা: শৈশব ও কৈশােরে বিচিত্র কারণে অসংখ্যবার মাজারে যাওয়া আসা করতে হয়েছিল আমাকে। খুব কাছ থেকে দেখেছি মাজারে ঘটা সব কর্মকাণ্ড। দিবারাত্রি অবস্থান করে দেখেছি ওরসের আয়ােজন। তখন থেকেই মাথার মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল মাজার। যদি কোনােদিন লিখতে শিখি, তবে মাজার নিয়ে একটা বই লিখবই-এটা আমার আদিকালের সংকল্প। সে হিসেবে “বিভ্রম”-এর বয়স কমপক্ষে দেড় দশক। তবে “বিভ্রম”-এর গল্প কেবল মাজারেই সীমাবদ্ধ নেই। গল্পের প্রয়ােজনে চলে এসেছে জমিদারীর গল্প, স্বৈরাচার বিরােধী আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই বইয়ে রাজনীতি নিয়ে যে আলােচনা করা হয়েছে সেটা পরিপূর্ণ নয়। কিছু তথ্য ও আলােচনা ধ্রুব সত্য, আবার কিছু কিছু ব্যাপার এসেছে নিছক গল্পের প্রয়ােজনে। কোনটা সত্য এবং কোনটা গল্প-সেটা যে-কোনাে সচেতন পাঠক সহজেই আলাদা করে ফেলতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। এই উপন্যাসে একটা বড়াে অংশ জুড়ে আছে গান। নব্বই’র দশকে আমাদের গ্রাম বাংলায় পল্লি গান প্রচণ্ড প্রভাব বিস্তার করতাে। গল্প ও ঘটনা প্রবাহের প্রয়ােজনে অসংখ্য গান তুলে দিয়েছি বেশ কিছু চরিত্রের মুখে। অর্ধেকের মতাে গান আমাদের দেশের সুপরিচিত মরমী সাধকদের লেখা। বাকি অর্ধেক লিখেছি নিজে। বিখ্যাত সব গানের মধ্যে আমার লেখা গান আলাদা করে নেওয়া কঠিন হবে না। এই উপন্যাসের পটভূমি বাংলাদেশের ঠিক কোন অঞ্চলের সেটা খুব সচেতনভাবেই এড়িয়ে গেছি। পাঠক নিজেদের সুবিধামতাে অঞ্চল বিবেচনা করে পড়ে নিতে পারেন।