“জ্যামিতির আরো যত কৌশল (গণিত অলিম্পিয়াড সহায়ক) (চতুর্ভুজ, বহুভুজ ও বৃত্ত নিয়ে নানান সমস্যা ও সমাধান)” ভূমিকাঃ এখন থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মহান গ্রিক দার্শনিক Plato প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘আকাদেমিয়া। সে-সময় জ্যামিতি ব্যাপারটাকে তারা এতটাই গুরুত্ব দিতেন যে, সেই একাডেমির মূল ফটকে লেখা ছিল-“যে জ্যামিতি জানে না, সে যেন এই দরজা দিয়ে না ঢােকে! সেই প্রতিষ্ঠানে পড়তে জ্যামিতি জানাটা যেন ছিল বাধ্যতামূলক, অনেকটা এখন ভর্তি পরীক্ষার মতাে! এই এত বছর পরে এসেও জ্যামিতির গুরুত্ব এতটুকুও কমেনি। সময়ের সাথে সাথে তার রূপ বদলেছে, জ্যামিতিশাস্ত্র প্রাচীন ইউক্লিডীয় সমতল ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছে নানান রকম বক্রতায়, এক-দুই কিংবা তিন মাত্রায় তাকে আর আটকে থাকতে হয় না। তবু মহান ইউক্লিড যেই পথটা বাতলে দিয়েছিলেন—শুরুতে স্বতঃসিদ্ধ ধরে নেয়া তারপর ধীরে ধীরে উপপাদ্য প্রমাণ—সেই ‘Axiomatic System’ এখনও আধুনিক গণিতের প্রাণভােমরা হয়ে আছে। এর সাথে পরিচয় হওয়াটা তাই খুবই জরুরি ব্যাপার। আমি মনে করি, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের একটা সৌভাগ্য হলাে আমাদের পাঠ্যক্রমে এখনও সমতলীয় বা ইউক্লিডীয় জ্যামিতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বর্তমান পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই এটা নেই। আধুনিক গণিতকে জায়গা দিতে গিয়ে উনিশশাে সত্তরের দশকে ফরাসি শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইউক্লিডীয় জ্যামিতি ধীরে ধীরে সরিয়ে ফেলা হয়, পরে আমেরিকা এবং ইউরােপের বহু দেশ তাদের অনুসরণ করে। ব্যক্তিগতভাবে এটাকে আমার কাছে ভুল সিদ্ধান্ত মনে হয়। স্বতঃসিদ্ধ থেকে কী করে ধাপে ধাপে প্রমাণ করতে হয়, সেটা শেখার জন্য এই জ্যামিতি খুবই চমৎকার একটা সূচনা। আমাদের গণিত পাঠ্যবইগুলােতে বেশকিছু উপপাদ্য, সম্পাদ্য আর সমস্যা দেয়া আছে। শুরুর জন্য সেগুলাে একেবারে খারাপ নয়। তবু যারা ঐটুকুতে আটকে থাকতে চায় না, যারা এই মনােমুগ্ধকর জগৎটায় আরাে কয়েকধাপ হেঁটে যেতে চায় তাদের জন্য ‘জ্যামিতির যত কৌশল এবং জ্যামিতির আরাে যত কৌশল’ বইগুলাে দারুণ সহায়ক হতে পারে। জ্যামিতির আরাে যত কৌশল’ বইটি এর আগে প্রকাশিত ‘জ্যামিতির যত কৌশল’ বইয়ের উত্তরসূরি। চতুর্ভুজ, বহুভুজ এবং বৃত্ত সংক্রান্ত নানান সমস্যা এবং সেগুলাে সমাধানের কৌশল বইটিতে রয়েছে। এখানে বলে রাখা যায় আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে জ্যামিতি নিয়ে যত সমস্যা আসে, তার একটা বড় অংশ থাকে বৃত্তস্থ চতুর্ভুজ সংক্রান্ত। যারা অলিম্পিয়াডে আগ্রহী তারাও এই বইয়ের অনুশীলনীগুলাে থেকে বৃত্ত এবং চতুর্ভুজের সম্পর্কগুলাে সম্পর্কে আরাে স্পষ্ট ধারণা পাবে। জ্যামিতির যত কৌশল' বইটির মতাে এই বইটিও অসংখ্য আগ্রহী পাঠকের কাছে পৌঁছে যাক, সেই শুভকামনা রইল। সূচিপত্রঃ অধ্যায় এক : পূর্বকথন * পূর্ব আলােচিত সংজ্ঞা * পূর্ব আলােচিত উপপাদ্য বা সূত্র * চিহ্ন বা প্রতীক অধ্যায় দুই: চতুর্ভুজ * চতুর্ভুজ * ট্রাপিজিয়াম * সামান্তরিক * রম্বস। * আয়ত * বর্গ * যদি ও কেবল যদি * চতুর্ভুজের সমস্যাবলি * সার-সংক্ষেপ * অনুশীলনী * তােমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ অধ্যায় তিন : বহুভুজ * বহুভুজের প্রাথমিক ধারণা * বহুভুজের ক্ষেত্রফল * সার-সংক্ষেপ * অনুশীলনী তােমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ অধ্যায় চার : বৃত্ত * বৃত্তচাপ, বৃত্তচাপের দৈর্ঘ্য এবং পরিধি * ক্ষেত্রফল * ক্ষেত্রফল সম্পর্কিত আরাে কিছু সমস্যা * সারসংক্ষেপ। * অনুশীলনী * তােমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ * অধ্যায় পাঁচ : বৃত্ত এবং কোণ * বৃত্তস্থ কোণ * কেন্দ্রস্থ কোণ * বৃত্তের অভ্যন্তরে এবং বাইরে কোণ * স্পর্শক * বিশেষ কিছু সমস্যাবলী * সার সংক্ষেপ * অনুশীলনী * তােমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ * অধ্যায় ছয় : পাওয়ার অফ পয়েন্ট * (পরস্পর ছেদী জ্যা) * পরস্পর ছেদী জ্যা * বিশেষ কিছু সমস্যা * সার-সংক্ষেপ * অনুশীলনী তােমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ
‘জ্যামিতির যত কৌশল’ বইটির ফ্ল্যাপের কথাঃ যা যা ছাড়া গণিতকে অসম্পূর্ণ বলা যায় তার একটি হচ্ছে জ্যামিতি। আধুনিক প্রকৌশলবিদ্যা ও স্থাপত্যবিদ্যা থেকে শুরু করে আরো অনেক ক্ষেত্রেই জ্যামিতির গভীর এবং সুস্পষ্ট ব্যবহার রয়েছে। এই বইটি মূলত আমাদের দেশের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর নিয়মিত ছাত্রছাত্রী যারা জ্যামিতির ভীতিকে দূর করতে চায় এবং গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণে ইচ্ছুকদের জন্য লেখা। গণিত অলিম্পিয়াডসহ সকল প্রতিযোগিতায় জ্যামিতিক সমস্যায় হাত পাকা করার ভাল উপায় হলো। বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে জ্যামিতিক টুলসগুলো ভাল করে জেনে তার সঠিক প্রয়োগ করা। এই বইটিতে অনেকগুলো টুলস প্রয়োগের কৌশল দেখানো হয়েছে। জ্যামিতি যেমন গণিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তেমনিভাবে জ্যামিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ত্রিভুজ। জ্যামিতির আলোচনার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ত্রিভুজের আলোচনা। আমাদের এই বইয়ের মূল ফোকাস ত্রিভুজ। বিন্দু, সরলরেখার সংজ্ঞা দিয়ে শুরু করে আলোচনা এগিয়ে গিয়েছে। ত্রিভুজের সর্বসমতা, সদৃশ ত্রিভুজ, ত্রিভুজের পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল নিয়ে। এছাড়া সমকোণী ত্রিভুজ, সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের মতো বিশেষ ত্রিভুজ নিয়েও বিশদ আলোচনা করা হয়েছে বইয়ের শেষ অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে ত্রিকোণমিতি নিয়েও।গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলি বক্সে দেয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে পাঠকদের জন্য পর্যাপ্ত সমস্যা অনুশীলনের জন্য দেওয়া হয়েছে। তাই গণিত অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী। ও সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে জ্যামিতির ভয়কে জয় করতে চায় এমন পাঠকের জন্য বইটি বিশেষ উপযোগী। প্রচ্ছদ : আনওয়ার ফারুক সূচিপত্র প্রথম অধ্যায় : জ্যামিতির শুরুর কথা ১.১ মিশরের জ্যামিতি ১.২ ব্যবিলনের জ্যামিতি ১.৩ প্রাচীন গ্রিসের জ্যামিতি ১.৪ প্রাচীন ভারতীয় জ্যামিতি ১.৫ মধ্যযুগে জ্যামিতি ১.৬ সতের ও আঠারো শতকের জ্যামিতি ১.৭ আধুনিক জ্যামিতি দ্বিতীয় অধ্যায় : প্রাথমিক ধারণা ও সংজ্ঞা ২.১ বিন্দু, সরলরেখা এবং তল ২.২ বৃত্ত ২.৩ স্বীকার্য ২.৪ ইউক্লিডের স্বীকার্যসমূহ ২.৫ সাধারণ ধারণা। তৃতীয় অধ্যায় : কোণ ও তার পরিমাপ ৩.১ কোণ কাকে বলে? ৩.২ কোণ কিভাবে পরিমাপ করা হয়? ৩.৩ সমাধানের কৌশল ৩.৪ সরল কোণ ও বিপ্রতীপ কোণ ৩.৫ সমান্তরাল রেখা ৩.৬ ত্রিভুজের কোণ ৩.৬ বহিঃস্থ কোণ ৩.৮ সারসংক্ষেপ ৩.৯ অনুশীলনী ৩.১০ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ চতুর্থ অধ্যায় : সর্বসম ত্রিভুজ ৪.১ সর্বসম বলতে কী বুঝায়? ৪.২ SSS সর্বসমতা ৪.৩ SAS সর্বসমতা ৪.৪ ASA এবং AAS সর্বসমতা ৪.৫ SSA সর্বসমতা (সাবধান এই শর্ত সবসময় সঠিক নয়) ৪.৬ সমদ্বিবাহু এবং সমবাহু ত্রিভুজ ৪.৭ সারসংক্ষেপ ৪.৮ অনুশীলনী ৪.৮ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ পঞ্চম অধ্যায় : পরিসীমা ও ক্ষেত্রফল ৫.১ পরিসীমা ৫.২ ক্ষেত্রফল ৫.৩ একই ভূমি / একই উচ্চতা ৫.৩ সারসংক্ষেপ ৫.৪ অনুশীলনী ৫.৫ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ অষ্টম অধ্যায় : ত্রিভুজের বিশেষ ধর্মাবলী ৮.১ সমদ্বিখণ্ডক ৮.২ ত্রিভুজের লম্ব সমদ্বিখণ্ডক ৮.৩ ত্রিভুজের কোণের সমদ্বিখণ্ডক ৮.৪ ত্রিভূজে ৮.৫ উচ্চতা ৮.৬ বিশেষ সমস্যাবলী ৮.৭ সারসংক্ষেপ ৮.৮ অনুশীলনী ৮.৯ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ নবম অধ্যায় : জ্যামিতিক অসমতা ৯.১ ভূমিকা ৯.২ ত্রিভুজের বাহু এবং কোণ ৯.৩ ত্রিভুজের অসমতা এবং পীথাগোরাস উপপাদ্য ৯.৪ ত্রিভুজের অসমতা ৯.৫ সারসংক্ষেপ ৯.৬ অনুশীলনী ৯.৭ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ দশম অধ্যায় : ত্রিকোনোমিতির পরিচয় ১০.২ ত্রিকোণমিতি এবং সমকোণ ১০.৩ অনুশীলনী ১০.৪ তোমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ