"প্রাচীন বাংলায় মুসলিম আগমন-৩য় খণ্ড" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা” বাংলার ইতিহাস রচনা করতে গিয়ে অনেক গবেষকই বখতিয়ারের আগমনের পূর্ব থেকে বাংলায় আগমনকারী প্রচারক-মুসলিমদের সঙ্গে বখতিয়ার এবং বখতিয়ার পরবর্তী শাসক-মুসলিমদের গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু প্রচারক-মুসলিম ও শাসক-মুসলিম এক নয়। প্রচারক-মুসলিমরা মানুষের মন-জয় করছিল, শাসকমুসলিমরা করছিল দেশ জয়। শাসক, শাসকই। তার চরিত্র শাসন, শশাষণ এবং প্রতাপ দেখানাে, সে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম যে-ই হােক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, শাসক মুসলিমদের ত্রুটিগুলাে প্রচারক মুসলিম ও ইসলামের উপরই চাপিয়ে দিয়েছেন ইতিহাসবিদরা। এ ইতিহাসবিদদের মধ্যে মুসলিম ইতিহাসবিদরাও আছেন বললে ভুল হবে, বরং তারা একটু বেশি বেশিই আছেন। মুসলিম ঐতিহাসিকরা লিখেছেন, ‘মুসলিম আক্রমণ। এটা ‘প্রচলিত ইতিহাস', যার রচয়িতা হিন্দু অথবা খ্রিস্টান ইতিহাসবিদগণ। এটা প্রায় ‘মিথ’-এ পরিণত হয়েছে। মুসলিম ঐতিহাসিকরা এদের মতামতকেই শিরােধার্য করে নিয়েছেন, একবারও ভাবেননি, মুসলিমরা কোথায়, কখন কাকে আক্রমণ করল? মাত্র ১২ জন ঘােড়সওয়ার নিয়ে একটি রাজ্য, একটি দেশ আক্রমণ করা যায়? কিন্তু আমরা ব্যতিক্রম দেখি, দীনেশ চন্দ্র সেনকে অথবা কমরেড গােপাল হালদারকে। তারা লিখেছেন, মুসলিম বিজয়'। এ বিজয়ের রূপ ও প্রেক্ষাপটও তারা বর্ণনা করেছেন। আমি যখন বাংলায় মুসলিম আগমনের পূর্বাপর আগমনের ঘটনাগুলাে নিয়ে রচিত ইতিহাসবিদদের বিচ্ছিন্ন লেখাগুলাে সংগ্রহ করছি, তখন দুঃখের সঙ্গে এসব মূল্যায়ন পর্যবেক্ষণ করেছি। এজন্য বইটির প্রথম খণ্ডের নামে আমি যুক্ত করেছি, ‘প্রাচীন বাংলায় মুসলিম আগমন : একটি নিকট পর্যবেক্ষণ।
ড. মােহাম্মদ হাননান সহস্রাব্দ ও শতাব্দীর ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইত্যাদির ওপর যে। সংগ্রহ-সংকলনটি করেছেন তা অনুসন্ধিৎসু যে-কোনাে পাঠকের কাছেই বিশ্বকোষের স্বাদ এনে দেবে। শতাব্দীর বাংলাদেশ, শতাব্দীর বিশ্ব, সহস্রাব্দের বাংলাদেশ, সহস্রাব্দের বিশ— গ্রন্থ চারটিকে নানাভাবেই সাজানাে যায়। এখানে পাঠক বাংলাদেশকে পাবেন দু’ভাবে-শতাব্দী ও সহস্রাব্দের মতাে করে, আবার বিশ্বকেও পাবেন শতাব্দীর পাশাপাশি সহস্রাব্দের পটভূমিতে। শতবছর অথবা হাজার। বছরের পরিক্রমায় বাংলাসমাজ ও বিশ্বসমাজ এভাবেই গ্রন্থ চারটিতে মূল্যায়িত হয়েছে।