এ গ্রন্থের ১৪টি গল্পের মধ্যে ভালােবাসা অথবা বিভ্রম দারুণ এক পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে পাঠককে। ভালােবাসা আর তা হারানাে অনুভবের এক বৈচিত্র্যময় চিত্রকল্পের উপাখ্যান যেন গল্পটি। তেমনি সংসার গল্পে এক তরুণ দম্পতির শারীরিক সুখের ইচ্ছাটিকে প্রবলভাবে দেখানাে হয়েছে। সংসারে বিশ্বাস ও আস্থা থাকলে যে খুঁটিনাটি সমস্যাগুলাে দূর করা যায়- পাঠক এ গল্পে যেন। তাই অনুভব করবেন। বাবা ও একটি নীল প্রজাপতি গল্পে। নিজের হারিয়ে যাওয়া বাবাকে অনেকটা অ্যাবস্ট্রাক্ট ফর্মে ফিরিয়ে এনেছেন গল্পকার। আততায়ী গল্পে নিজের প্রেমিকা সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যায় বসের সাথে আবার ভাতঘর গল্পে প্রেমিকার বাবার ঋণের টাকা শােধ করতে গিয়ে দূর সমুদ্রে হােটেল ব্যবসা দেয় গল্পের নায়ক কিন্তু টাকা পাঠানাের পর ঋণ শােধ না করে সেই টাকা দিয়েই মেয়েকে অন্য এক ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন মেয়ের বাবা। ‘বন্ধু’ গল্পে হিন্দু ও মুসলিম ছেলের মধ্যে বন্ধুত্বে দেখা গেছে, যে যে ভাষায় কথা বলে, সে ভাষায়ই বলতে থাকবে, পাল্টে যাবে না গায়ের রংয়ের পরিচয়ও। শুধু বদলাতে হবে মানুষের মনের রং। কেবল এই একটি পরিবর্তনই পারে হিন্দু না মুসলিম’- এই হাস্যকর প্রশ্নটিকে উড়িয়ে দিতে। দারুণ এক সিকোয়েন্সে শেষ হয় প্রেমিকা গল্পের পটভূমি। এছাড়াও বাকি গল্পগুলাে ভিন্ন ভিন্ন পটভূমিতে দারুণ কিছু মেসেজ দেয় পাঠককে। প্রিয় পাঠক, মােস্তফা সােহেলের গল্প মানেই অন্যরকম অনুভব। ভাষা আর বর্ণনা দারুণ সাবলীল কাহিনীর টানটান উত্তেজনা আপনাকে নিয়ে যাবে গল্পের নিরেট এক ভুবনে। চলুন সেই সময়টুকু দারুণভাবে উপভােগ করি।
Mostafa Sohel জন্ম ১২ জানুয়ারি, যশোর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর । আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত। কৈশোর থেকে বিভিন্ন সংকলন সাময়িকী এবং পত্রিপত্রিকায় লেখালেখি শুরু। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেবো। প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে । ২০১০ এ প্রকাশিত হয় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নিঃসঙ্গ টারমিনাল”। সম্পাদনা করেছেন অনলাইন কবিতা পত্রিকা চোখ" ও "কাটাকুটি । ২০১২ সালে উপন্যাসের জন্য তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পুরস্কার লাভ করেন। লেখকের অন্যান্য উপন্যাসগুলোর মধ্যে “তুমি আমায় প্রথম ছুঁয়েছিলে’, ‘ভালোবাসার এক রূপালী রাত’, ‘আনন্দবাড়ি’ ও ‘বুনো জ্যোৎস্নায়’ উল্লেখযোগ্য।