”বঙ্গবন্ধু বিরোধী মিথ্যাচার বাংলাদেশের রাজনীতি”বইয়ের প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করে গেলেন যে মিথ্যাচার-অপপ্রচারণার রয়েছে এক অপ্রতিরােধ্য বিপুল শক্তি। মিথ্যাচার-অপপ্রচারণার শিকারে বাঙালি জাতির হাজার বছরের উত্তমপুরুষ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জীবনপাত ঘটেছে, তার মহান পবিত্র নামের ওপর। নানান কলঙ্ক ও অপবাদের কালিমা লােপিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু চিরবিদায় নিয়ে চলে গেছেন, আর কোনাে নতুন কলঙ্ক-অপৰাদ কে স্পর্শ করতে পারবে না। কিন্তু তার বাঙালি জাতি? এই বাঙালি জাতি নানান অপপ্রচারণার শিকারে পরিণত হয়ে বিভ্রান্তির অতলান্তে হাবুডুবু খেয়ে চলেছে। যে বঙ্গবন্ধু এই জাতি ও এই দেশকে বিশ্বসভায় সম্মান ও মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, সেই বাঙালি জাতিই বাঙালি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশবিরােধী দেশি-বিদেশি কুচক্রীমহলের অপপ্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়েছে, মিথ্যাকে সত্য জেনেছে। বন্ধুকে শত্রু ভেবেছে, জনককে দূরে ঠেলে দিয়ে দানবকে কাছে টেনে নিয়েছে! অথচ একটি বার বুকে হাত রেখে চিন্তা করে দেখলেই জাতি প্রকৃত সত্যকে বুঝতে পারত। দুর্ভাগ্য এখানেই যে, তারা দানবের হাতছানিতে জনককে অবহেলা করেছে। এর মূল্য অবশ্যই জাতিকে দিতে হবে।
আবীর আহাদ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাংবাদিকতা ও সাহিত্যাঙ্গনের এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব '৭১-এর বীরমুক্তিযোদ্ধা আবীর আহাদ বাংলাদেশের সুদীর্ঘকালীন স্বাধীনতা সংগ্রাম, '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উপর ব্যাপক গবেষণাকর্মে লিপ্ত থেকে ২০-২২টি ঐতিহাসিক গ্রন্থের প্রবর্তক। '৭৩-'৭৪ সাল। সবেমাত্র তাঁর সাংবাদিকতা ও লেখালেখির জগতে পদার্পণ। একজন টগবগে যুবক। যখন '৭৭ সালে সাহিত্য ও গবেষণামূলক সাময়িকী 'আজকাল' ও '৮০ সালে সাপ্তাহিক 'বঙ্গকণ্ঠ' পত্রিকা সম্পাদনা করতেন তখনও দেখা গেছে তিনি বেশকিছু তত্ত্বগত বিষয়ের অবতারণা করে সামাজিক মানুষের ভাবনার বিকাশ এবং উত্তরণের বিবিধ জটিলতা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে 'বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' এবং 'বঙ্গবন্ধু: দ্বিতীয় বিপ্লবের রাজনৈতিক দর্শন' ১৯৯২ সালের প্রকাশনাঙ্গনে উক্ত গ্রন্থ দুটি ছিল সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী গ্রন্থ। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেসব বিষয়ে বিশেষমহল থেকে সীমাহীন মিথ্যাচার ও অপপ্রচারণার বিষবাষ্প ছড়ানো হয়েছে যে-সবের শক্তিশালী জবাব প্রথমেই দিলেন আবীর আহাদ অত্যন্ত জ্ঞানগর্ভ যুক্তিতর্কে ও বাক্যশৈলীতে। তাঁর বৈশিষ্ট্যই হলো, তিনি বক্তব্য দেন খোলামেলা মুক্তমনে, নির্ভীক শব্দচয়নে, বিপ্লবাত্মক ভঙ্গিতে। নির্মল পূতঃপবিত্র বঙ্গবন্ধু সপ্রতিভসত্তায় বাঙালী জাতির হৃদয়পটে ফুলেলস্নিগ্ধতা নিয়ে প্রোজ্জ্বল হয়ে ভেসে উঠবেন।