"ভৌতিক গল্পগ্রন্থ: হুরপতঙ্গ" বইয়ের পেছনের কভারে লেখা: গাজিপুরের কোন এক গ্রামে একটা মেয়ে ছিল, মরিয়ম। এক ছেলে, এক মেয়ে, ব্যবসায়ী জামাই। লােকটা ব্যবসার কাজে সারাক্ষণ থাকতাে বাইরে। বাইরে একবার অনেক দিন হয়ে যাচ্ছে সে। ঘরে আসে না। তার স্ত্রী যাকেই পায় জিজ্ঞেস করে - রাস্তায় কোন সমস্যা হল কি না, কোন দুর্ঘটনা ঘটলাে কি না। দুই বাচ্চার দেখাশােনা একা করতে গিয়ে তার অবস্থা খারাপ। একদিন মরিয়ম বাজার দিয়ে হেটে যাচ্ছিল বাচ্চাদের নিয়ে। তারা মাত্র হাটতে শিখেছে। এমন সময় দেখে ঘােড়ায় করে তার স্বামী আসছে। সাথে একটা পালকি। মরিয়ম দৌড়ে গেল তাদের দিকে। গিয়ে দেখল পালকির ভেতর বৌয়ের সাঁজে আরেকটা মেয়ে। লােকটা যখন বলল সে তার বাচ্চাদের নিতে এসেছে। মহিলার মাথা একদম খারাপ হয়ে গেল। সে মুহুর্তে রাগে, ক্ষোভে সে বাচ্চা দুটাকে তুলে পানিতে ফেলে দিল। রাগ কমে আসার পর সে বুঝতে পারে কি করে ফেলেছে। তারপর থেকে সে ঐ নদীর পাড়ে বসে কান্না করতাে দিনরাত। কেউ সামনে দিয়ে গেলেই তাকে বলতাে তার বাচ্চাদের খুঁজে দিতে। একদিন হঠাৎ গ্রামের মানুষ তাকে আর দেখে না। অনেকে বলে সে পানিতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু কেউ আসলে জানে না। এখনাে রাতের অন্ধকারে মরিয়ম নদীর পাড়ে বসে কান্না করে। নিজের বাচ্চাদের জন্য। গ্রামের কোন বাচ্চা তার। সামনে পড়লে সে নিয়ে যায় তাকে। সবাই তাকে চেনে ‘রােদন বুড়ি' নামে।
লেখক পরিচিতিঃ "ছোট থেকেই পুরান ঢাকায় বসবাস। ঘরের পশে দেশের সর্ববৃহৎ বইয়ের আড়ৎ - বাংলাবাজার এবং বাবা ছিলেন দেশের স্বনামধন্য প্রকাশক। বইয়ের জগতে হারিয়ে যাওয়াটা ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার। স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে কিশোর গোয়েন্দা এবং রহস্য উপন্যাস ক্রয় করা দিয়ে শুরু। নিজের কল্পনা একজন লেখক কিভাবে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে সেটা সবসময়ই তাকে মুগ্ধ করেছে। সেই মুগ্ধতাকে কেন্দ্র করেই লেখালেখির শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস 'মধ্যরাতে টিনের চলে ঢিল মারিলো কে' - ক্রাইম থ্রিলার। অন্যন্য নতুন লেখকদের সাথে কাজ করার ইচ্ছা থেকেই রাইটার্স প্রোজেক্ট নামের একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করে ২০১৫ সালে। টানা তিন বছর এ প্রতিযোগিতা আয়োজনের ফলাফল তিনটি সম্পাদিত গল্পগ্রন্থ 'গেরুয়া রঙিন গল্প' - ১, ২, ৩। স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে বর্তমানে চাকরিজীবী।