“বছরের দীর্ঘতম রাত" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ যেভাবে দিগন্তের কাছে পাহাড়ের সবুজ মিশে থাকে আকাশের নীলে- হঠাৎ দেখে বােঝা যায় না। কোনটা আসলে কার রঙ, তেমনি আবদুল্লাহ আল মুক্তাদিরের দ্বিতীয় গ্রন্থ, বছরের দীর্ঘতম রাত, যা আপাতদৃষ্টিতে ছােটগল্পের সংকলন, ধারণ করে তার অন্তর্গত কবিত্বকে । শুধু জঁরা নিয়ে নয়, প্লট আর থিমেও তিনি করেছেন প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ভেঙেছেন ভাষার কট্টরপন্থী একগামিতা, ব্যবহার করেছেন ভিন্নমাত্রার চরিত্রায়ণ রীতি। কপূরগাছ যে হতে পারে নায়ক, কিংবা পরপারে চলে যাওয়া মানুষের আত্মা যে হয় কোনাে গল্পের প্রধান। চরিত্র- গল্পপাঠকের স্বাভাবিক অভিজ্ঞতা আর প্রত্যাশায় তা অনুমেয় নয়। লােককথা থেকে শুরু করে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অনেক পুরাণের প্রত্যক্ষ আর পরােক্ষ উল্লেখ রয়েছে গল্পগুলােতে, একইভাবে রয়েছে দেশিবিদেশি সংগীতের রেফারেন্স। লেখকের কল্পনার বহু অদেখা বা চোখ এড়িয়ে যাওয়া বিষয় পাঠকের দৃষ্টিসীমায় এনে দেয় এই গ্রন্থের গল্পেরা । মুক্তাদিরের নিজস্ব ভাষারীতি, যা অন্য গাঙের গান, সমুদ্রসমান নামের কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছিল প্রথমবারের মতাে, এই গ্রন্থে তা বিকশিত হয়েছে গদ্যের হাত ধরে। মােট একুশটি গল্পে ভিন্ন ভিন্ন রঙের সমাহার, কখনাে কখনাে একে অন্যকে ছাপিয়ে গেছে, ছাড়িয়ে গেছে, কোথাও আবার মিলেমিশে গেছে, রেখা আর বিভঙ্গে তৈরি করেছে নতুন ছবি।
আব্দুল্লাহ আল মুক্তাদির -এর জন্ম ১৯৯০ সালে, সিরাজগঞ্জে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পড়াশোনা শেষ করে এখন শিক্ষকতা করছেন ত্রিশালের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে। দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতায় ছোটগল্প ও কবিতা প্রকাশের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ২০১০ সালে। প্রকাশিত বই কবিতা অন্য গাঙের গান, সমুদ্রসমান (২০১৬) যুদ্ধ যুদ্ধ রুদ্ধ দিন (২০২০) গল্প বছরের দীর্ঘতম রাত (২০১৯) উপন্যাস গডেস অভ অ্যামনেশিয়া (২০২২)