মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার এর লেখা ‘তুমি আমার স্কুল’ একটি শিশুতোষ গল্পের বই। বইটিতে পাঁচটি গল্প সূচিবদ্ধ করা হয়েছে। এগুলো হল- র্পার শিঙের গল্প, নুসরাতের একটি ভোর, খালামণির কোয়েল দুটো, তুমি আমার স্কুল এবং বাঁধনহারা নদী। শিশু-কিশোরদের মনে খেলা করে নানা প্রশ্ন, নানা কৌতুহল। কল্পনার জগতে ভর করে তারা সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়। রাজা, রাণী, রাজপুত্র কিংবা ভূত পেতœীর গল্প শুনতে ভালোবাসে। কিন্তু এর বাইরেও তাদের এমন কিছু গল্প বা বিষয় সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হয়, যা শুনে তারা সচেতন হয়ে উঠতে পারে। এমন সচেতনতার গল্প খুব একটা পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদারের এই গল্পের বইটি প্রাধান্য পাবে। বেশ কিছু বাস্তব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই গল্পগুলো লেখা হয়েছে। নানা ধরণের ভ্রান্ত শিক্ষা থেকে দূরে থাকতে ও এ বিষয়ে সচেতন হতে শিক্ষা দেবে বইটি। এ বইয়ের প্রথম গল্প অর্পার শিঙের গল্প। ছোটবেলায় আমরা সবাই মাথার সাথে মাথায় আঘাত লাগলে আবার নিজের মাথার সাথে মাথা মিশাতাম এবং বলতাম যে, তা না হলে মাথায় শিং গজাবে। এটা একটি কুসংস্কার। আর এই ছোট অথচ মজার বিষয়টিকে নিয়ে লেখা হয়েছে গল্পটি। ‘খালামণির কোয়েল দুটি’ একটি অবুঝ ছেলের গল্প। যে ছেলেটি কোয়েল পাখিদের গরম থেকে রক্ষা করতে গিয়ে তাদের ফ্রিজে ভরে রাখে। ফলে ফ্রিজের ঠান্ডায় মারা পড়ে কোয়েল। এছাড়া এ বইটির শিরোণামের যে গল্পটি তার নাম হল- আমর স্কুল। এ গল্পে ফাবিরকে স্কুলের শিক্ষক ও বন্ধুরা খুব হিংসা করে কারণ ফাবির ধনীর সন্তান। তার সাথে কেউ তেমন একটা চলে না। এবং তাকে কেউ তেমন একটা সহযোগিতাও করে না। এ কথা তার মাকে বললে তার মা তাকে বলে, তোমার যতো প্রয়োজনের কথা আমার কাছে বলবে। আমি তার সমাধান করে দেবো। এরপর থেকে ফাবির তার মাকে স্কুল বলে মনে করে। ছোট ছোট বাক্য এবং অল্প কথার বর্ণনার মধ্য দিয়ে এ গল্পগুলো লেখা। এ বইয়ের গল্প পড়তে পড়তে এক ধরণের সচেতনতা ও বুদ্ধি বিকাশে পথ প্রসস্থ হবে।
মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার (Mohammad Abdullah Mozumder) গণতান্ত্রিক, ন্যায়বিচার, মনুষত্ব সম্পন্ন ও অধিকার সচেতন সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণের এক অপ্রতিরোধ্য যোদ্ধা। বিশ্বাস তার একমাত্র অবলম্বন। দুঃখকেই তিনি জীবনের চূড়ান্ত সত্য হিসেবে বিশ্বাস করেন। রক্তের সম্পর্কের বাধঁন ও কোন রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া শুধুমাত্র আত্মনির্ভরশীলতার দায়ে তিনি স্বার্থান্ধ রাজধানীতে টিকে আছেন। তার কোন রাজনৈতিক চাহিদা না থাকলেও সামাজিক বহু দায়বদ্ধতা রয়েছে। অর্থপূর্ণ জীবন ও মানুষ গড়ার শিক্ষাব্যবস্থার স্বপ্ন দেখেন বিভোর হয়ে। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার উত্তর যশপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। পিতা মৌলভী মোহাম্মদ বেলাল মজুমদার আর মা জোসনা আক্তার। মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মজুমদার জীবনবাদী কবি হিসেবে পরিচিত। তার বিভিন্ন লেখনি ও কবিতায় বঞ্চিত মানুষের হাহাকার, বিপ্লব ও মানুষের জীবনবোধের চিত্র ফুটে উঠেছে। এছাড়াও তার শিশুতোষ লেখনি শিশুদের বাস্তব জীবনের তিক্ত সংগ্রামে অভ্যস্ত হবার প্রতি অনুপ্রাণিত করে। ইতোপূর্বে তিনি বিভিন্ন অনলাইন সংবাদমাধ্যম, সাপ্তাহিক পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও দৈনিক সংবাদপত্রে কাজ করেছেন বর্তমানে তিনি একটি বাংলা সংবাদপত্রে উপ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।