"মেঘে ঢাকা তারা: বিস্মৃতির মেঘে ঢেকে যাওয়া বাঙালি বিজ্ঞানী" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: আমাকে স্বীকার করতেই হবে যে মেঘে ঢাকা তারা একটি ভিন্ন ধরনের বই । আমরা যখন কোনাে শিল্পী, সাহিত্যিক বা বিজ্ঞানী নিয়ে বই লিখি সবসময়েই তখন বিখ্যাত কাউকে বেছে নিই। আমরা ধরেই নিয়েছি কারও জীবনী লিখতে হলে এমন কাউকে বেছে নিতে হবে যাকে সবাই এক নামে চিনে। অতনু চক্রবর্তী কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা কাজ করেছেন। তার বইটি লিখেছেন এগারােজন বাঙালি বিজ্ঞানী নিয়ে যারা সবাই বিস্মৃতপ্রায়। নূতন প্রজন্ম যদি এদের কাউকে না চিনতে পারে আমি একটুও অবাক হব না, কিন্তু তাঁদের কয়েকজন সম্পর্কে একটুখানি বলা হলেই তারা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যাবে। যেমন ধরা যাক রাধানাথ শিকদারের কথা। আমরা সবাই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের নাম জানি। এটি এভারেস্ট সাহেব আবিষ্কার করেননি, এটি আবিষ্কার করেছিলেন রাধানাথ শিকদার নামে একজন তরুণ বাঙালি গণিতবিদ। কিন্তু এই পর্বতশৃঙ্গের নামকরণ করা হয় রাধানাথ শিকদারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এভারেস্টের নামে! ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে একজন বাঙালিকে তার যােগ্য সম্মান দেওয়ার উদারতা ছিল না সেটি নিয়ে অবাক হওয়ার কী আছে? কিংবা ধরা যাক রাধাগােবিন্দ চন্দ্রের কথা। বারবার চেষ্টা করেও কোনভাবে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করতে পারছেন না, কিন্তু তিনি একজন জগৎবিখ্যাত জ্যোতির্বিদ! তার জীবদ্দশায় প্রায় ৩৮ হাজার ভ্যারিয়েবল স্টার পর্যবেক্ষণ করে তিনি সারা পৃথিবীতে পরিচিত হয়েছিলেন! কিংবা বলা যায় উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর কথা, যিনি ম্যালেরিয়ার মত প্রাণঘাতী আরেকটি রােগ, কালাজ্বরের চিকিৎসা আবিষ্কার করে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন। | নতুন প্রজন্ম যদি এই বিজ্ঞানীদের নাম শুনে না থাকে আমরা নিশ্চয়ই আশা করব তারা এই বইটির বাকি আটজনের নামও শুনে থাকবে যদিও তারা সবাই নিজের ক্ষেত্রে একজন করে উজ্জ্বল নক্ষত্র। অতনু চক্রবর্তী অনেক পরিশ্রম এবং অনেক মমতায় এই বিস্মৃতপ্রায় বিজ্ঞানীদের জীবন ইতিহাস দুই মলাটের মাঝখানে একত্র করেছেন। তাকে অভিনন্দন। | এই বইটি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি নিশ্চিত আমার মতাে আরও অনেককে অনুপ্রাণিত করবে।
Title
মেঘে ঢাকা তারা: বিস্মৃতির মেঘে ঢেকে যাওয়া বাঙালি বিজ্ঞানী