বই সম্পর্কে মেধা, জ্ঞান ও প্রতিভায় যারা আমাদের আকাশে আলো ছড়িয়েছেন তাদের এ অধিষ্ঠান হয়েছিল কিভাবে―একজন স্বপ্নচারী ও প্রত্যয়ী শিক্ষার্থীকে এ জিজ্ঞাসা তাড়া করাটাই স্বাভাবিক। যে নবীন ইতিহাসের সোনালী ধারায় যুক্ত হতে চায় পূর্বসূরির জ্ঞান, সাধনা ও প্রতিষ্ঠার রহস্য তাকে উন্মুক্ত করতেই হবে। সাধারণত প্রতিভা ও ব্যক্তিত্বের প্রতিষ্ঠায় তিনটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অভিভাবক, শিক্ষক ও বই। বই এমন এক মাধ্যম যা যুগপৎ হাজার বছরের জ্ঞান-সাধনাকে শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরে এবং হাজার বছরের লেখক, গবেষক ও খ্যাতিমানদের সাহচর্য প্রদান করে। এজন্যই সাইয়িদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. আন-নাদওয়া পত্রিকায় মাশাহীর আহলে ইলম কী মুহসিন কিতাবেঁ নামে একটি বিভাগ চালু করেছিলেন। এ বিভাগে সমকালীন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আলেম ও জ্ঞানীরা তাদের প্রিয় বইয়ের কথা লিখেছিলেন। মাওলানা নদভী এ বিভাগ চালু করেছিলেন মিশরের আলহেলাল এর الكتب التي أفادتني (যে বই আমাকে উপকৃত করেছে) বিভাগের অনুসরণে। মাওলানা আবুল হাসান আলী নদভী নিজেও লিখেছেন, الشخصيات والكتب। কিন্তু বাংলাভাষায় আমাদের অঙ্গনে এ বিষয়ে কাজ হয়তো এটাই প্রথম। প্রিয় লেখক প্রিয় বই―লেখক ও বইয়ের জীবনী। জীবনী এত সুখপাঠ্য হতে পারে এ বই না পড়লে কেউ বুঝতে পারবে না। এতে স্থান পেয়েছে আমাদের নিকটঅতীতের ও সমকালীন পাঁচজন মনীষীর প্রতিষ্ঠার গল্প ও তাদের জীবনগঠনমূলক বইয়ের আলোচনা। ব্যক্তিত্ব গঠনের মুখ্য বিষয়গুলো তুলে এনেছেন খুব সুন্দরভাবে। যে বইগুলোর কথা তিনি আলোচনা করেছেন তা-ও করেছেন খুবই চমৎকার ভঙ্গিতে। এখানে উল্লিখিত বইগুলোর অনেকগুলোই হয়তো আপনি পড়ে থাকবেন তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস প্রিয় লেখক প্রিয় বই পড়ার পর সে বই পড়ার পিপাসা আবার জেগে উঠবে। যে লেখককে আপনি জেনেছেন পড়েছেন, তাকেই জানবেন ও অধ্যয়ন করবেন নতুনভাবে। বড় যদি হতে চাও (বইটি এপ্রিল 2017 সালে প্রথম প্রকাশিত হয়ে ফেব্রুয়ারি 2019-এ এসে মাত্র দুই বছরেরও কম সময়ে বিক্রি হয়েছে প্রায় বারো হাজার কপি) এর পর এটাই (প্রিয় লেখক প্রিয় বই) হয়তো মাওলানার সেরা উপহার হবে। বইটি শুরু করেই চমৎকৃত হবেন, মুগ্ধ হবেন। একেকটি পৃষ্ঠা পড়বেন আর আন্দোলিত হবেন, নিজেদের সোনাঝরা ইতিহাস পড়ে গর্বে বুক ফুলে উঠবে, তাদের মেধা ও কীর্তিতে হবেন অভিভূত ও মুগ্ধ। সে মুগ্ধতা ধরে রাখবে শেষ পর্যন্ত। ২১৬ পৃষ্ঠার বইটি শেষ করে আফসোস করে বলতেই হবে, আর কয়েক পৃষ্ঠা লিখলে তেমন কী ক্ষতি হয়ে যেত ...
মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীন জন্ম ২০ নভেম্বর ১৯৬৭, মুন্সীগঞ্জ দাওরায়ে হাদীস ও আরবি সাহিত্যে উচ্চতর ডিগ্রি, দারুল উলুম দেওবন্দ পেশা : শিক্ষকতা প্রিয় শহর : মক্কা মুকাররামা ও মদীনা মুনাওয়ারা। উল্লেখযােগ্য মৌলিক গ্রন্থ ত্রিভুবনের প্রিয় মুহমদ (সা.), ভয়-স্বপ্ন সংগ্রাম, নারীর শত্রু মিত্র, সাহসের গল্প, সাহিত্যের ক্লাস, বক্তৃতার ক্লাস, ইসলামে জীবিকার নিরাপত্তা, ভুবনজয়ী নারী, শহীদানের গল্প শােন (১-৩), তােমার অলৌকিকতায় আজো অবাক পৃথিবী, ইসলাম একালের ধর্ম, আকাশে অঙ্কিত নাম। অনূদিত গ্রন্থ কুরআন অধ্যয়নের মূলনীতি, তাজা ঈমানের ডাক, হালাল হারাম, আমেরিকান নওমুসলিমদের ঈমানদীপ্ত কাহিনী, ইসলাম একমাত্র জীবনবিধান, হাদীসের দর্পণে আমাদের কাল, মানবতার নবী, আলােকিত নারী, দেশে দেশে, ইসলাম ও ফ্যাশনের সংঘাত, নির্বাচিত বয়ান (১-২), ভারতীয় নওমুসলিমদের ঈমান জাগানিয়া সাক্ষাৎকার, আল্লাহকে যদি পেতে চাও প্রভৃতি।