"এখানে যুক্তিরা মৃত " বইয়ের পেছনের কভারে লেখা” বাগানের প্রতিটা ফুলগাছের সাথে মালিহার অদ্ভুত বন্ধুত্ব, তার যখনই মায়ের কথা মনে হয় ফুলগুলাের কাছে চলে যায়, বাগানে সে মাকে অনুভব করতে পারে। মালিহা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে একটা ভয়ঙ্কর অসুখ দিনদিন তাকে কাহিল করে দিচ্ছে। যেই অসুখটার জন্য তার মাকে ছাড়তে হয়েছিল এই পৃথিবী। বাবাকে সে খুব ভালােবাসে কিন্তু কি করে বাবাকে বলবে সে আর বাবার সাথে থাকতে পারবেনা? এ বাড়িতে তার সময় ফুরিয়ে এসেছে? অসময়ে শরীফ উদ্দীন সাহেবকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল একটা সামান্য এভিডেন্ট। কিশােরী নীলুকেই তখন সংসারের হাল ধরতে হয়েছিল, জীবন যুদ্ধটা সততার সাথে করতে করতেই একদিন দেখা হয় অশরীরি কারাে সাথে, নীলু ভয়ে জমে গিয়েছিল যখন ছায়াহীন মানবী তাকে একদম কাছে থেকে ছুঁয়ে যায়।br মীরা প্রায় সকালে একটা স্বপ্ন দেখে, ঘনকৃষ্ণবর্ণ একটা ১০/১২ বছরের ছেলে তার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে, মীরা যখনই ছেলেটাকে হাত বাড়িয়ে ছোঁয়ার চেষ্টা করে তখনই একটা আলাের ঝলকানি দিয়ে ছেলেটা কি সুন্দর একটা মেয়েতে পরিণত হয়ে যায় আর সঙ্গে সঙ্গে মীরার চোখ খুলে যায়, ঘুম ভাঙ্গার পর প্রতিবারই সে বেশ কিছুক্ষণ থম মেরে বসে স্বপ্নের ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করে।br তাহমিনা তার ছােট ভাইবােনকে সবসময় গল্প শােনায়, গল্প করতে করতে তার মনটা খারাপ হয়ে যায়, ভীষন ইচ্ছে করে মা বাবাকে জড়িয়ে ধরতে, কেন এতাে কম বয়সে তাদের দুনিয়ে ছেড়ে চলে আসতে হয়? আকাশ থেকে বসে। যখন সে তার মায়ের মলিন মুখটা দেখে মনমরা হয়ে বসে আছে হারিয়ে গেছে তার হাস্যজ্বল মায়ের মুখটা তখন ভীষন ইচ্ছা করে মাকে অভিশপ্ত জীবন থেকে মুক্তি দিতে কিন্তু ওর যে জানা নেই কি করে তা করতে হবে।br মুকু রহশ্য কি কখনও কেউ সমাধান করতে পারবে? জগৎ ভীষণ রহশ্যময়, প্রকৃতি মাঝে মাঝে নিয়মের বাইরের কিছু ঘটনা ঘটায় যার কোন ব্যাখ্যা হয়না, এই ব্যাপারগুলাের থাকেনা কোনাে কারণ, থাকেনা যুক্তি কেননা এখানে যে। যুক্তিরা মৃত।
আদনীন কুয়াশার জন্ম ঢাকায়। বাবার চাকুরীর সুবাদে ঘুরে বেরিয়েছে দেশের নানান জেলায়,শৈশবের বেশ লম্বা সময় কেটেছে চট্টগ্রামে, তার পুরো নাম রুদাবা আদনীন, ছোটবেলা থেকে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে জড়িত। বিটিভির নতুন কুঁডি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। বই পড়ার অভ্যাস থেকেই সাহিত্য চর্চার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। শুরুতে কবিতা লিখতেন। এখন গল্পলিখেন। ফেসবুকে নানান গ্রুপে নিজের লেখা গল্পগুলো পোস্ট করে বেশ আলোচিত হোন এবং পরবর্তিতে ছাপার অক্ষরে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান। স্বামী নাসিরুদ্দীন রেহান, একমাত্র কন্যা রুদমিলা আদনীন আর একমাত্র বোন রুবাবা আদনীন মুমু কেনিয়ে লেখকের আপন ভুবন।