"ক্যামোফ্লাজ" বইয়ের পেছনের কভারে লেখা:নিকিতা, অনিমা, প্রিয়ম, শ্রেষ্ঠ ও তপু। তারা পাঁচজন পরস্পরের বন্ধু। পাঁচজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী। নিকিতা বর্তমানকালের উঠতি মডেল, তপু বিভিন্ন সংগঠন করে। বিপ্লবকেন্দ্র' নামে একটা সংগঠন, অনেকদিন ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে কেবল মৃত্যুদণ্ডকে বহাল রাখতে আন্দোলন করে যাচ্ছে, সে সংগঠনের সভাপতি সে। তাদের পাঁচ বন্ধুর সবারই আছে এমন স্বতন্ত্র কিছু বৈশিষ্ট্য। ঘটনাক্রমে তাদের মাঝে কয়েকজন জড়িয়ে পড়ে একটা সংগ্রামে, একটা আন্দোলনে। এটা না বলে অবশ্য বলা উচিত, ঘটনাক্রমে তাদের কয়েকজনকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠে একটা আন্দোলন। কিন্তু তারা কীসে জড়িয়ে পড়েছে নিজেরাই জানে না, বােঝে না। এমনও নয় যে তারা ইচ্ছা করে জড়িয়ে পড়েছে। বরং বলা যায়, জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়েছে। দুদিন আগেও যেখানে জীবন ছিল খুব স্বাভাবিক, নিকিতা নতুন একটা বিজ্ঞাপনের জন্য শুট করছিল, প্রিয়ম টিউশন করিয়ে বাসায় ফিরে আসছিল বড়াে ভাইয়ের মেয়ের জন্য চকলেট নিয়ে প্রতিদিনকার মতাে, সেখানে অকস্মাৎ চারপাশ থেকে তাদের ঘিরে ধরেছে ভীষণ বিপদ। সেই বিপদ থেকে তারা মুক্তি চায়, কিন্তু সেই মুক্তি কীভাবে আসবে তাদের সে সম্পর্কে কোনাে ধারণা নেই। কেবল পুতুলের মতাে তারা নেচে যাচ্ছে অন্য কারাে কথায়, যেমনটা বলা হচ্ছে করে যাচ্ছে ঠিক তেমনটাই। এমন অনেক কিছু করতে হচ্ছে তাদের, যেসব কাজ কোনােদিন করতে হবে- তেমনটা দূরতম কল্পনাতেও ভাবেনি তাদের কেউ। তাদের ইচ্ছা বলতে কিছু নেই আর, পরিস্থিতি যা করতে বলছে তাই তারা করছে। বিচার করছে না, সেই কাজ ভালাে নাকি খারাপ। কারণ তারা মুক্তি চায়, আর এই মুক্তির জন্য মানুষ যে কোনােকিছুই করতে পারে অন্তত ইতিহাস তাই বলে। ঘটনার শুরু তাদের চোখের সামনেই, কিন্তু ঘটনার শেষ কোথায় হবে তারা জানে না। চারপাশ থেকে প্রতিদিন কানে তাদের ভেসে আসছে নতুন নতুন অনেক খবর, যেগুলাে তারা শুনতে চায় না, কারণ সেসব খবর তাদের বিপদটাকে আরাে বাড়িয়ে তােলে আগের চেয়ে। মাঝে মাঝে মনে হয় তারা মুক্তির খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। ঠিক পরেই তারা বুঝতে পারে, মুক্তি এখনাে অনেক অস্পষ্ট। যত দিন যায় তাদের সন্দেহ আরাে গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়, যে হয়তাে এই বিপদ থেকে কোনােদিনই মুক্তি পাবে না তারা। তারপরও মুক্তির জন্য তারা চেষ্টা করে যায়, অপেক্ষা করে যায়, মুক্তির জন্য তেমনটাই করে যায়, যেমনটা করতে বলা হয়। যদিও তারা জানে না এই চেষ্টা, এই অপেক্ষা সফল হবে কি না।