মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) রাহমাতুল্লিল আলামীন’ বা সমগ্র বিশ্বজগতের জন্য রহমত স্বরূপ। তিনি শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্যই প্রেরিত হননি; তাঁকে (সা.) প্রেরণ করা হয় সমগ্র সৃষ্টিকূলের জন্য। তিনি (সা.) বিশ্ববাসীকে আজীবন যেমন শান্তির বাণী শুনিয়েছেন, বাস্তবেও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর (সা.) অসাধারণ সাফল্যের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক মদিনা সনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় হিজরত করার পর সেখানকার ইহুদী, নাসারা, পৌত্তলিক এবং মুসলমানসহ সকল জাতি-গােষ্ঠীর সমান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে যে সনদ তৈরি করেছিলেন তা ইতিহাসে প্রথম লিখিত শাসনতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃত। বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের লােককে একই সমাজে, একই রাষ্ট্রে কীভাবে মিলেমিশে বসবাস করতে হয় সে শিক্ষা লাভ করা যায় মদিনা সনদ থেকে। এ সনদ পরমতসহিষ্ণুতা ও উদারতার এক প্রকৃষ্ট উদাহরণ। মদিনা সনদ ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল রয়েছে, এর একটি হুদায়বিয়ার সন্ধি এবং অন্যটি বিদায়হজ্জের ভাষণ। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, পারস্পরিক নিরাপত্তা, পরিশীলিত জীবনাচারের জন্যে মানবজীবনে এ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দলিলের ইতিবাচক ও অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে। রাহমাতুল্লিল আলামীন হজরত মুহাম্মদ (সা.) সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ববােধের ভিত্তিতে একটি জাতি, একটি সাম্রাজ্য ও একটি ধর্ম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি বিরল দৃষ্টান্ত।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, লেখক ও সংগঠক, মদন মােহন কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল (অব.) এম আতাউর রহমান পীর ৮ই এপ্রিল ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে সুনামগঞ্জ শহরের ষােলঘর মহল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মরমি কবি শাহ আছদ আলী পীর (রহ.)-এর প্রপৌত্র এবং স্বনামধন্য শিক্ষক মরহুম আব্দুল মান্নান পীর-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র। তার মাতার নাম আইয়ুবুন্নেছা খাতুন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে তিনি এমসি কলেজ থেকে রসায়নে অনার্স এবং ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরি জীবনে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে বিএড় এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণিতে এম.এড ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলার আঠারবাড়ি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে একই জেলার গৌরীপুর কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি মদন মােহন কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যােগদান করেন এবং ২০০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে একই কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ২০১০ খ্রিস্টাব্দে অবসরগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি সিলেট সেন্ট্রাল কলেজে প্রিন্সিপাল হিসেবে কর্মরত আছেন। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর-এর অফিসার হিসেবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কর্তৃক কমিশনপ্রাপ্ত হন এবং ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। তার সমাজসেবামূলক কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে সিলেট মুক্তিযুদ্ধ একাডেমি কর্তৃক সম্মাননা পদক লাভ করেন এবং ২০০২ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষামন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক সম্মাননা ও স্বর্ণপদক লাভ করেন। এছাড়া ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ স্কাউট কমিশনার পদক, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা গ্লোবাল ইনস্টিটিউট থেকে সমাজসেবা পদক এবং ২০১১ খ্রিস্টাব্দে বিএনসিসি থেকে আজীবন সম্মাননা পদক লাভ করেন।