এই গ্রন্থে গবেষণার বিষয় একাত্তরের ঈদ। ১৯৭১ সালে বাঙালি একটাই ঈদ উদযাপন করেছিল এবং তা ছিল ঈদুল ফিতর, যা পালিত হয়েছিল ২০ নভেম্বর, শনিবার। বাংলাদেশ তখন শত্রুকবলিত, মার্চ থেকে নিয়ে নভেম্বর পর্যন্ত নৃশংস সব হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেই শত্রুরা। নভেম্বরে মানুষ কেঁদেছে, কিন্তু বিজয়ের স্বপ্নও দেখছে। এরকম এক মিশ্র অনুভূতির সময় হাজির হয়েছে ঈদ। | যেসব মুক্তিযােদ্ধা ভারতের নানান শিবিরে চৌকিতে থেকে যুদ্ধ করছিলেন, যেসব রাজনীতিবিদ। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, আর যারা নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তারাও ঈদ পালন করেছেন। দেশের ভেতরে যেসব মুক্তিযােদ্ধা শত্রুকে ক্রমাগত আঘাত হেনে যাচ্ছিলেন, তাদের জীবনেও ওই ঈদ এসেছে। এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে ঈদ উদ্যাপনে সময়টার প্রতিফলন। ঘটেছে, জেগে ওঠা অদম্য বাঙালি সত্তার প্রতিফলন ঘটেছে। ফলে ঈদ পালনের ইতিহাসটি একটি ভিন্ন। মাত্রায় একাত্তরকে দেখার সুযােগ করে দেয়। ...প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও তাঁর পরিবার কীভাবে উদযাপন করেছিলেন, শহিদ আশফাকুস। সামাদই-বা কীভাবে তা করেছিলেন, রণাঙ্গনের ক্যাম্পে মুক্তিযােদ্ধারা ঈদে কী করেছিলেন, বিশাল। সংখ্যায় শরণার্থীরাই-বা কীভাবে ঈদের দিনটা কাটিয়েছেন—এসবের বর্ণনা আছে বইটিতে। একই সঙ্গে শত্রু অধিকৃত বাংলাদেশের ঈদ কেমন ছিল তার কিছু বর্ণনা আছে, আছে ঈদে রাজাকারদের। বেতন-ভাতা বাড়ানাের সংবাদ-বিশ্লেষণ। বাশার খানের ভাষাটি সহজ, গতিশীল, তার। দেখার দৃষ্টিটি তীক্ষ , পর্যবেক্ষণগুলাে মনে রাখার। মতাে। আমি নিশ্চিত একাত্তরের ইতিহাসের সার্বিক অবয়বটি তুলে ধরতে একাত্তরের ঈদ গ্রন্থটি উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রাখবে।