"নিনাদ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: জীবনের ভিতর গল্পের বাস অথবা গল্পের ভিতর জীবন। নিনাদ গল্পের চরিত্রগুলাে খুব চেনা, এদের সাথেই আমাদের নিত্যদিনের বাস। পুরুষানুক্রমে জীবনজুড়ে হেঁটে বেড়ায় এক কায়া, তাই মানুষের চিরচেনা পৃথিবী অপ্রথাগত পরিবর্তনে দেখা দেয় ভিন্ন ভিন্ন রূপে। রূপ বদলের এই ভেলকি তার নিজের সৃষ্টি নয় তবুও তাকেই সব দায়ভার বহন করতে হয়। মায়া-স্বার্থপরতা-স্বৈরতার এক অভেদ্য চক্র জীবনের বাঁকে বাঁকে ওৎ পেতে থাকে তাই আমরা একইসাথে বসবাস করি ভালােবাসা এবং ঘৃণার সখ্যতায়। শাহানারা এবং তার পুত্র আজমল ওরফে আজু’কে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে গল্পের স্রোতধারা। অরণ্য ধনীর দুলাল, আজমল পরিচ্ছন্ন কর্মী, মনসুর নাদিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, হামিদুর রাহিম পুলিশ কর্মকর্তা এরা সবাই জৈবিক মানচিত্রে একই সরল রেখায় এসে দাঁড়ায়। জীবন কখন কার সাথে বন্ধন তৈরি করে আবার কাকে শত্রুরূপে হাজির করে মনুষ্য চিন্তার অন্তঃপ্রবাহে সে এক অপার রহস্য! গল্পে তিনটি চরিত্রের নাম দু’ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে তাদের অতীতকে বর্তমানে ধরে রাখার নিমিত্তে। তাছাড়া ছিন্নমূল শিশু এবং মাদক বিষয়ক তথ্যগুলাে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং গুগল থেকে নেয়া। গল্পের এক পর্যায়ে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রতিবেদন আকারে প্রকাশের প্রয়াসে এমনটা করা হয়েছে।
যারা ধরিত্রীর বুক হতে ধুতরার শিকড় উপড়ে রোপন করেন, "নন্দিনী মায়া"র লেখক তাঁদেরই একজন। কালের দোর্দণ্ড প্রতাপে মানুষ যখন হারিয়ে ফেলে সুন্দর স্বপ্নে ভরা স্বস্তির সকাল, হর্ষহীন জীবন হতে যখন চুয়ে পড়ে কেবলই অন্ধকার অমানিশা- সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে লেখক সুন্দরের বিন্দু বিন্দু বোধের চরকায় সুতা কেটে বুনে চলেন সম্পর্কের শরীর। আর এ কারণেই তিনি বেছে নিয়েছেন শিক্ষকতা পেশাকে। তিনি শিক্ষার্থীদের মননে পরিয়ে দেবার চেষ্টা করেন নান্দনিক শৈলীর মখমলি পোশাক। আর তাদের অন্তরাত্মার মাঝে সৃজন করেন সত্য ও সুন্দরের মানবিক উপাখ্যান। যে উপাখ্যান একই সাথে ধারণ করে সভ্যতার নির্মম সত্য-রূপ এবং স্বপ্ন ও আশার বিস্তীর্ণ বেলাভূমি।