কবি খােরশেদ বাহার একজন কবি এবং কবিতা নির্মাতা। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন প্রকৌশলী বা বলা যায়। নির্মাণশিল্পী। শব্দকে তিনি তার মতো করে নির্মাণ করেন, যুক্ত করেন অক্ষর দিয়ে, বোধ ও মনন দিয়ে। তার সৃষ্টিতে আকুল এক আর্তি আছে, যা পাঠকের মন ছুঁয়ে যায় আবার খানিক পরেই এক শূন্যতায় ভরিয়ে দেয়। এই যে শূন্যতার সঙ্গে উপলব্ধি ও অনুভব এবং তাকে নিজের অস্তিত্বের ভেতরদেশে নিয়ে নিজের মতাে করে হৃদয়ঙ্গম করা তারই। প্রতিফলন ও রূপান্তরিত রূপ প্রকাশিত হয়েছে এ কবিতা সংকলন ‘সময়ের ছাপচিত্র’তে। ছন্দ সচেতন এই কবি প্রেমাতুর এবং প্রধানত প্রেমিক এবং সেটাই তার প্রধান বৈশিষ্ট্য। কবিতা বহুদর্শী ও বহুমুখী কবিরাও। একমাত্র কবিতাই পারে তার সৌন্দর্য ও রূপ দিয়ে বিরূপতা আর তার অরূপতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হতে। কবি ও কবিতার এটাই প্রধান কর্ম ও কর্তব্য। আপাত দৃষ্টিপাতে এই সৃষ্টিশীলতা যতই দুর্বল, অসম্পন্ন ও অসম্পূর্ণ মনে হােক না কেন এর অন্তর্নিহিত রূপক শিল্পশক্তিকে কখনো। খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। বাহার ছন্দপ্রিয় কবি, বিশেষ করে দেখা যায় বেশ কয়েকটি কবিতা স্বরবৃত্তে চয়ন করেছেন সফলভাবে। প্রেম, নিসর্গ, প্রকৃতি, সুখ, দুঃখ, অভিমান- এইসবই কবিতার নির্মাণ সামগ্রী। কবি বাহার মানুষের ওইসব সুক্ষ্ম অনুভূতির সাহায্যে আমাদের মনের অন্তর্নিহিত অন্তর্জালা ও আন্তর্দাহনের পাশাপাশি আন্তর্মুখ আর আন্তর্শক্তিকে কবিতার মধ্য দিয়ে এক দক্ষ ডুবুরির মতো খুঁজে ফিরেছেন আন্তরিকভাবে । তার কবিতাশিল্পের অনুসন্ধিৎসা আরও প্রবল, আরও বেগবান এবং আরও সৃষ্টি সুষমায় সার্থক হোক।