''জগদীশচন্দ্র বসুকে লেখা রবীন্দ্র পত্রাবলী'' বইটির ফ্ল্যাপের লেখাঃ ১৮৯৬ সালে সার্থক বৈজ্ঞানিক সফর শেষে জগদীশচন্দ্র বসু দেশে ফেরার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অভিনন্দন জানাতে একগুচ্ছ ম্যাগনোলিয়া ফুল নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান । কিন্তু, জগদীশচন্দ্ৰ বসুকে বাড়িতে না পেয়ে তিনি ফুলগুচ্ছ তাঁর বাড়িতে রেখে আসেন । সেই থেকে রবীন্দ্র-জগদীশের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের সূচনা । রবীন্দ্রনাথ যখন শিলাইদহে অবস্থান করতেন, তখন জগদীশচন্দ্র বসু প্রায়ই এখানে আসতেন । কলকাতা ও দার্জিলিংয়ে তাঁদের ঘরোয়া আড্ডা বসত । রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘কথা' কাব্যগ্রন্থ উৎসর্গ করেছেন জগদীশচন্দ্র বসুকে । জগদীশচন্দ্র বসু তাঁর ‘The Nervous Mechanism of Plants' বইটি উৎসর্গ করেছেন বন্ধু রবীন্দ্রনাথকে । ভারতবর্ষে বিজ্ঞান গবেষণার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির' (Bose Institute) প্রতিষ্ঠা করেন । অপরদিকে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠা করেন ‘শান্তি নিকেতন' । জগদীশচন্দ্র বসু বিলেতে অবস্থানকালে অর্থাভাবে যখন দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন, তখন রবীন্দ্রনাথ রাজা-মহারাজাদের শরণাপন্ন হয়ে অর্থ সংগ্রহ করে বিলেতে পাঠিয়ে জগদীশের গবেষণাকর্ম চালিয়ে যেতে সাহায্য করেন । আর সে গবেষণার ফল তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছিল । এই দুই বাঙালি কীর্তিমান পুরুষ তাঁদের বন্ধুত্বের স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে । পরস্পরকে লেখা তাঁদের চিঠিগুলো বাংলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ ও উর্বর । এ চিঠিগুলো তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা ও বহুমাত্রিকতা অনুধাবনে সহায়ক হবে ।