‘সন্তানঃ স্বপ্ন দিয়ে বোনা’ বইয়ের কিছু কথাঃ সন্তান, নিছক কোনো জৈবিক ক্রিয়ার ফল নয়; বরং তারা আমাদের স্বপ্ন, আমাদের পৃথিবী এবং আখিরাতের পাথেয়। সন্তানকে যদি শৈশব থেকে সদাচরণ, সত্য কথা বলা আর পাপ-পুণ্যের পাঠ না দেওয়া হয়, তাহলে বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই সন্তান মা-বাবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তাকে আর কোনোভাবেই মূল্যবোধের পাঠ শেখানো যায় না। একজন মুসলিমের কাছে সন্তান প্রতিপালনের দায়িত্বটা আরও বিশাল। মুসলিম মা-বাবার অবশ্য কর্তব্য হলো—তাদের সন্তানদের প্রকৃত মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলা। সন্তানকে প্রকৃত মুসলিম হবার এই পাঠ খুব শৈশবেই দিতে হয়। সন্তান যেদিন জন্মলাভ করে, সেদিন থেকেই মা-বাবার ওপর এই দায়িত্ব এসে পড়ে। সন্তানের নাম রাখা থেকে শুরু করে তার আকীকা, তার শিক্ষাদীক্ষাসহ বিস্তৃত দিকনির্দেশনামূলক বইয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেই কলম হাতে তুলে নিয়েছেন উস্তায আকরাম হোসাইন হাফিজাহুল্লাহ। সন্তান গ্রহণের উপযুক্ত সময়-নির্ধারণ থেকে শুরু করে একেবারে সন্তানের লালন-পালনের খুঁটিনাটি বিষয়সমূহও লেখক নজরে এনেছেন। এমনকি, নিঃসন্তান দম্পতি, তাদের প্রতি অন্যদের আচার-আচরণ ও সমাজের অবস্থানের বিষয়াদিও স্থান পেয়েছে লেখকের কলমে।‘প্যারেন্টিং’ বিষয়ে উস্তায আকরাম হোসাইন হাফিযাহুল্লাহর ‘সন্তান : স্বপ্ন দিয়ে বোনা’ বইটি সন্তানদের ভালো মানুষ, ভালো সন্তান এবং সর্বোপরি প্রকৃত মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে মা-বাবাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
যেসকল লেখক ধর্ম, প্রেম, জীবন ও সৃষ্টিশীলতার মধ্যে অতি সূক্ষ্ম, তবে সুতীব্র ও অটুট একটি যোগসূত্র আবিষ্কারের চেষ্টা করেন, বাস্তবতার আঙিনায় দাঁড়িয়ে শৈল্পিক ও গতিময় ভাষায় সেই যোগসূত্রের প্রাসঙ্গিকতা ও যথার্থতা ব্যাখ্যা করেন, আকরাম হোসাইন সেই সারির একজন তরুণ লেখক। তার লেখনীতে আমরা ধর্ম, প্রেম, জীবন ও সৃষ্টিকর্মকে পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে দেখতে পাই। একটি ছাড়া অপরটি যে কোনোμমেই পূর্ণাঙ্গ ও প্রাণবন্ত হতে পারে নাÑএধারণাটি আমরা তার রচনায় বিশ^াসের উচ্চতায় উন্নীত হতে দেখি। এ ছাড়াও শিশু, কিশোর ও যুবা-কেন্দ্রিক রচনায় আমরা লেখকের ভিন্ন একটি সত্তার সন্ধান পাই। আমরা গভীর বিস্ময়ে আবিষ্কার করি, ব্যক্তিজীবনে একজন নিভৃতচারী মানুষ হয়েও তিনি তার লেখকসত্তার দর্পণে অত্যন্ত নিপুণভাবে শুধু নিজেরই নয় বরং সমকালীন সকলের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্য, এককথায় জীবনের পটপরিবর্তন এবং শিক্ষা, বয়স ও পরিবেশকেন্দ্রিক চিন্তা ও অভিপ্রায়গুলো চিত্রিত করেন। অভূতপূর্ব দক্ষতার সঙ্গে সেগুলোর প্রকৃতি নির্ণয় করেন। এবং পরম মমতার সঙ্গে এই প্রাকৃতিক পরিবর্তনের পিছনের বিকার ও সৃজনশীলতা ব্যাখ্যা করেন। এভাবে আমরা তাকে μমেই প্রেম, ধর্ম, জীবন এবং জীবনের অচ্ছেদ্য একটি অংশ বিয়ে ও বিয়ে-পরবর্তী জটিলতায় তারুণ্যের নির্ভরযোগ্য আশ্রয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে দেখি। এই প্রতিভাবান লেখক, ১৯৯২ সালের ১৯ নভেম্বর মানিকগঞ্জ জেলা আইড়মারা গ্রামের মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম জনাব আবদুল মান্নান। চার-ভাই বোনের মধ্যে তিনি কনিষ্ঠ।