একদিন থেমে যাবে জীবনের কোলাহল। মায়াবী এই জগৎ ছেড়ে সবাই পাড়ি জমাবে না ফেরার দেশে—জীবনের পরম গন্তব্যের উদ্দেশে। হয় জান্নাত নয় জাহান্নামই হবে ঠিকানা। কত স্পষ্ট কুরআনের ঘোষণা—‘জীবমাত্রই গ্রহণ করবে মৃত্যুর স্বাদ। কিয়ামতের দিন তোমাদের কর্মফল দেয়া হবে পূর্ণমাত্রায়। যাকে দূরে রাখা হবে জাহান্নাম থেকে এবং প্রবেশ করানো হবে জান্নাতে, সেই সফলকাম। আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫) যেকোনো মুহূর্তে বিদায়ের ডাক এসে যেতে পারে যে কারোই। তাই আখিরাতের পাথেয় সদা প্রস্তুত রাখতে হয়। কিন্তু পার্থিব জীবনের রূপ-রস-গন্ধে সারাক্ষণ বিভোর হয়ে থাকে মানুষ। দুনিয়ার মোহে পড়ে পরকালের প্রস্তুতির কথা বেমালুম ভুলে যায় তারা। তাই মাঝে মাঝে তাদের মনে করিয়ে দিতে হয় জীবনের পরম পরিণতির কথা। শোনাতে হয় সুখময় জান্নাতের গল্প—সতর্ক করতে হয় জাহান্নামের বিভীষিকাময় অগ্নিকু- থেকে। ‘স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে’ গল্পে গল্পে আপনাদের মনে করিয়ে দেবে আল্লাহর আনুগত্যের কথা—রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ভালোবাসার কথা। অন্তরে জাগিয়ে তুলবে আখিরাতের অতুল স্বপ্ন—জান্নাতের অমিত সম্ভাবনা। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে তুচ্ছ দুনিয়ার অসারতা। গল্পের ভেতর বিচরণ করতে গিয়ে উপলব্ধি করতে পারবেন, আপনার হৃদয়ে বাসা বেঁধেছে আল্লাহর ভয় আর পরকালের প্রস্তুতির দুর্নিবার বাসনা।
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গােত্রে। তার দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ। বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। তাঁর পিতা শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের । যশস্বী আলিম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। শাইখ আব্দুল মালিক। আল-কাসিম জন্ম সূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ্ণ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে । উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশােনা শেষ করে আত্মনিয়ােগ করেন লেখালেখিতে—গড়ে তােলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচারবিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক। অমূল্য গ্রন্থ। আত্মশুদ্ধিবিষয়ক বাইশটি মূল্যবান। বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নাহনু মিন হা-উলায়ি' নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত | হয়েছে লাখাে মানুষ। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। এই সিরিজের অনেকগুলাে বই। আজ-জামানুল। কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তার বিখ্যাত। গল্প-সংকলনটিও আরববিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা। করেছেন রিয়াজুস সালিহিনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ। দশ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।