“জীববিজ্ঞানের অ আ ক খ” বইটির ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথাঃ বইটি পড়লে কারাে মনেই হবে না যে এই বইটির লেখকদ্বয় ছাত্রজীবনে কখনাে জীববিজ্ঞান পড়েন নি। বরং নতুন এক দৃষ্টিকোণ থেকে জীববিজ্ঞান পাঠের এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হবে বলে আমার প্রত্যয়। লেখকদেরকে যেহেতু এই বইটি লেখার সুবাদে জীববিজ্ঞান শিখতে হয়েছে সেহেতু তাঁরা এক ধরণের সুবিধা পেয়েছেন যা আমার মতো জীববিজ্ঞান বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষিতদের মধ্যে থাকে না। সেটা হলাে, তাঁরা নিজেরা উপলব্ধি করেছেন যে জীববিজ্ঞান পাঠ করতে গিয়ে নবীন পাঠক কী অসুবিধায় পড়েন, কোন জায়গায় বুঝতে কী ধরনের সমস্যা হয় ইত্যাদি। আমার মতাে যাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক জীববিজ্ঞানে শিক্ষিত, তাঁরা অনেক সময়ই সাধারণ পাঠকের এই অসুবিধাগুলাে ধরতে পারেন না। মনােবিজ্ঞানে এর একটা গালভরা নামও আছে- ডানিং-কুগার ইফেক্ট। এই ইফেক্টের কারণে অনেক নামজাদা লেখক-শিক্ষক অনেক সময় নতুন শিক্ষার্থীদের মর্মমূলে জ্ঞানকে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হন। কিন্তু এই বইয়ের লেখকদের সেই সমস্যাটি নেই। কেননা তাঁরা নিজেরাই তাে জীববিজ্ঞান শিখতে শিখতে লিখছেন, লিখতে লিখতে শিখছেন। তারপরও কিছু জায়গায় ফাঁক থেকে যাওয়াই স্বাভাবিক, কেননা প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের হাজার হলেও দরকার আছে এরকম বই লেখার ক্ষেত্রে সেই ফাঁকটুকু অসামান্য দক্ষতায় পূরণ করতে প্রয়াস পেয়েছেন। এর সুযােগ্য সমপাদক, যিনি জীববিজ্ঞানের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত। জীববিজ্ঞান অলিমিপয়াডে অংশগ্রহণেচ্ছু শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে বইটি লেখা হলেও বিজ্ঞানে উৎসাহী যেকোনাে পাঠক বইটি পড়ে আনন্দ পাবেন বলে আমি মনে করি। এখানে জীববিজ্ঞানের সবকিছু ঢালাও ভাবে তুলে ধরা হয়নি, বরং গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেই সব দরকারী বিষয়গুলাে যা যা আমাদের দেশে প্রচলিত মূলধারার শিক্ষা ব্যবস্থায় অবহেলিত থেকে যায় স্রেফ কুসংস্কার ও পশ্চাৎমনস্কতার কারণে। যেমন : প্ৰজননতন্ত্র সংক্রান্ত ব্যাপার স্যাপার। এছাড়াও রয়েছে হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপনসহ নানা কৌতূহলােদ্দীপক বিষয়ে আলােচনা, যেগুলাে জীববিজ্ঞানের অন্তর্দৃষ্টি গড়ে তুলতে সহায়ক উদাহরণ হিসেবে বিবেচ্য।