ফ্রান্সের পত্রিকা 'লে মন্ডে'-র আয়োজিত জড়িপে 'দ্য জেনারেল অভ দ্য ডেড আর্মি' স্থান করে নিয়েছে শতাব্দীর সেরা ১০০ বইয়ের তালিকায়। বইটি এই প্রথম বাংলায় অনুদিত হলো। বইয়ের কাহিনী আর্বতিত হয়েছে ষাটের দশকের মাঝামাঝি যখন একজন পাদ্রীকে সাথে নিয়ে এক ইতালিয়ান জেনারেল আলবেনিয়া আসেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। তুষারপাত, বৃষ্টি আর স্থানীয়দের অপমান সহ্য করে কাজ করতে থাকা জেনারেল এই মিশনটাকে দেখেন একটা মহৎ মিশন হিসেবে, অন্যদিকে স্থানীয়দের কাছে এটা ছিল তাদের প্রাক্তন দখলদারদের অপমান করার এবং প্রতিশোধ নেবার সুযোগ। মিতবাক প্রাদী আর আলবেনিয়ান শ্রমিকদের সাথে নিয়ে মাসের পর মাস ধরে জেনারেল পাহাড়, উপত্যকায় ছোটাছুটি করেন আর কবর খুঁড়ে মৃতদের তুলে আনতে থাকেন। সেই সাথে তুলে আনেন ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিরহ শোক আর বীরত্বগাঁথা। পড়তে পড়তে পাঠকের এক অন্ধকার পৃথিবীতে প্রবেশের অনুভূতি হয়, সেখানে যুদ্ধের অসারতা আর ভয়াবহতা পাঠকের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে যায় কাদারের শব্দে শব্দে। এই ভয়াবহতা রক্ত কিংবা লাশের নয়, এই ভয়াবহতা এক ধরনের অস্তিত্বের অসারতার দিকে ইঙ্গিত দেয় -ইঙ্গিত দেয় সামগ্রিক বহু বিশ্বাসের ভঙ্গুরতার দিকেও। তথাকথিত যে গর্বিত ভাব নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে- আদৌ কি সেখানে সারবস্তু কিছু আছে? কিংবা সভ্যতার ক্রমবিকাশে অপরকে নাকচ করে দেবার যে বাসনা মানুষের মাঝে বিরাজ করে- এই বাসনা কি তার নিজেকেও অন্য কোথাও থেকে নাকচ করে দেয় না? কাদারের লেখার সার্থকতা এইসব প্রশ্নের উত্তরে, সে উত্তর লেখক নিজে দিয়েছেন কিনা তা ভাবার বিষয়। কিন্তু এই ভাবনাই অসংখ্য পুরনো চিন্তাকে পুনরায় সামনে আসার সুযোগ করে দেয়।