"কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে: রাসূল(সা:)-এর দু‘আ-মুনাজাত ও সহীহ্ ওযীফা" বইটির প্রারম্ভিকা অংশ থেকে নেয়াঃ দু'আ-প্রার্থনা বা ডাকাই ইবাদতের সর্বজনীন প্রকাশ। সকল যুগে সকল ধর্মের মানুষই মূলতঃ তার আরাধ্য বা উপাস্যকে ডাকে ও তার কাছে প্রার্থনা করে অপার্থিব অলৌকিক সাহায্য লাভের জন্য। আর যাকে অলৌকিকভাবে ডাকা হয় বা যার কাছে প্রার্থনা করা হয় তাকে সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা, কাক্ষিত বস্তু দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন সত্তা স্বীকার করা হয়। আশ্রয় প্রার্থনার মাধ্যমে স্বীকার করা হয় যে, গােটা সৃষ্টির মােকাবিলায় তিনি আশ্রয় দেয়ার এবং রক্ষা করার ক্ষমতা রাখেন। তাঁর শাস্তি থেকে বাঁচা, তার কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া, কোন কাঙ্ক্ষিত বস্তু প্রর্থনা করা ইত্যাদির মাধ্যমে তাঁকে সমগ্র বিশ্বজাহানের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী স্বীকার ও বিশ্বাস করা হয়। দুআ বা প্রার্থনার মাধ্যমে উপাস্যের উপরােক্ত ক্ষমতাগুলাের স্বীকৃতি চমৎকাররূপে পাওয়া যায়। এ কারণে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারাে কাছে অলৌকিকভাবে কোন কিছু চাওয়া শিরুক। এতে অন্যের কাছে ক্ষমতা আছে সাব্যাস্ত হয়, যা শিরক। অন্যদিকে ইবাদতের গুরুত্বপূর্ণ দিক - নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ ও উপাস্যের যিক্র বা স্মরণ করা, এটা দুআ বা প্রার্থনার মাধ্যমে সুন্দরভাবে প্রকাশ পায়। এজন্য হাদীসে নববীতে দু'আকেই ইবাদত বলা হয়েছে এবং দুআর অশেষ ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। দু'আ সাধারণতঃ তিন প্রকার: (১) বিভিন্ন ইবাদতের ক্ষেত্রে প্রয়ােজন, যেমন সালাত, সিয়াম, হজ্জ, কুরবানীর জন্য পড়তে হয়। (২) বিভিন্ন কাজের শুরুতে ও শেষে পড়তে রাসূল সাঃ শিখিয়েছেন। এ দু’প্রকারের দু'আয় কোনাে রকম পরিবর্তন পরিবর্ধন না করে রাসূল দাগঃ-এর শেখানাে দুআই পড়তে হবে। অর্থ বুঝে মনযােগের সাথে পড়লে আল্লাহ্ কবুল করবেন। (৩) উপরােক্ত দু’প্রকার দু'আ ব্যতীত যে দু'আ একা একা হাত তুলে করা হয়, তাতেও রাসূল সাঃ-এর শেখানাে দু'আর দ্বারা দু'আ করাই উত্তম। তবে এতে ব্যক্তি তার নিজের ভাষায়ও দু'আ করতে পারে। এ প্রকারের দু'আ কবুলের ব্যাপারে সামনে আলােচনা করা হয়েছে।
Title
কুরআন ও সহীহ হাদিসের আলোকে: রাসূল(সা:)-এর দু‘আ-মুনাজাত ও সহীহ্ ওযীফা