শিল্প-সাহিত্য-সমাজ বিষয়ক আলোচনায় সংস্কৃতি শব্দটির আনাগোনা বেশ কিছু সময় ধরে চলছে। শব্দটির নান্দনিক প্রতিভাস শ্রুতিমধুর ও দর্শনীয় হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত। তবে সংস্কৃতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একথাও অনেকে মানেন যে নান্দনিকতাই সংস্কৃতির একমাত্র রূপ নয়, মানবজীবনের সবকিছুই মানবতার সংস্কৃতিব্যঞ্জক। সেই দৃষ্টিতে সংস্কৃতির কথা উঠলে মানবসংস্কৃতির তথা মানবসমাজের মধ্যেকার তারতম্যও সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে গণ্য করা প্রয়োজন হয়ে উঠে। মানুষ যুগ যুগ ধরে অসাম্য বঞ্চনা হীনতার মধ্যে বেঁচে আছে, একই ব্যবস্থা পুনরুৎপত্তি অর্জন করেছে, হাজার বছর ধরে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় উন্নতি যৎসামান্য হলেও সেটাকে ফলাও করে বিশাল অর্জন হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, এবং আশ্চর্য যে মানবতা এত শঠতা মিথ্যা অন্যায় অবিচার যেন মেনে নিয়ে চরম ঔদাসীন্যে কালাতিপাত করে চলেছে। কোন জাদুতে কীভাবে কে কারা এটা সম্ভব করেছে? জ্ঞান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রভূত অগ্রগামিতার সময়ে এই অসামঞ্জস্য আমরাই বা কেন মেনে চলছি? এই রচনাগুলোর উদ্দেশ্য সমষ্টিগতভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দেবার প্রচেষ্টা এবং উত্তর সংগ্রহের জন্য আরো বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যার পথ প্রদর্শন করা। রচনাগুলোর শিরোনাম ভিন্ন তবে প্রতিপাদ্য বিষয় একই। এককভাবে পাঠ করলেও রচনাগুলো থেকে একই চিন্তার খোরাক সংগ্রহ প্রচেষ্টা এবং প্রবন্ধ পাঠের রসাস্বাদন ব্যহত হবে না।
১৯৭১এ মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামাবাদে কর্মরত ড. ফজলুল আলম পালিয়ে সপরিবারে ইংল্যান্ডে চলে যান। ১৯৯৬ সনে সুদীর্ঘ পঁচিশ বছর পরে দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে লাইব্রেরি অটোমেশান প্রজেক্ট (উটখঅচ) চালু করেন ও ইউএনডিপি অনুদানের প্রস্তাবিত সকল শর্ত সফলভাবে সময়মত কার্যকর করেন। প্রথম কয়েক বছর বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কলাম লিখলেও ২০০২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর পেয়ে সৃজনশীল ও মননশীল সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন। ২০০৪ সনে প্রকাশিত উপন্যাস ক্রান্তিকালে প্রতারক লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ডিগ্রি কোর্সে মনোনীত হয়। ইংল্যান্ডে তার দুটি প্রবন্ধ/গবেষণা বই প্রকাশিত হয়। সেখানে থাকা কালে তিনি নিজ খরচে লাইব্রেরিয়ানশীপে চার্টার্ড, এথনিক রিলেশান্সে মাস্টার্স ও কালচারাল স্টাডিজে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৭ সনে সংস্কৃতির সত্যমিথ্যা প্রকাশ করে তিনি নিজেকে একজন সংস্কৃতি অধ্যয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর তিনি প্রতি বছর সংস্কৃতি বিষয়ে একটা করে সুচিন্তিত ও তথ্যমূলক বই প্রকাশ করেন। ২০১০ সনে প্রকাশিত সংস্কৃতি সমগ্র সুধী মহলে ও বিদ্বদ্গোষ্ঠীতে বহুল সমাদৃত। তিনি সম্পূর্ণ নতুন বিষয় ‘সংস্কৃতিতত্ত্ব বিরোধিতা’র ওপরও লিখেছেন। তার পাঁচটি ছোটগল্প নাটক ও টেলিফিল্ম হিসেবে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হয়েছে। তাঁর একটা উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মানাধীন। তিনি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সর্বপ্রথম বিষয়ভিত্তিক টক-শো ‘কড়া আলাপে’র পরিকল্পক ও উপস্থাপক। তিনি দুটো গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন, সিটি ব্যাংকÑআনন্দআলো সাহিত্য পুরস্কার (২০০৮) ও বাংলা একাডেমি পরিচালিত সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৪)।