"রোড টু সাকসেস"বইটির ১ম ফ্লাপের কিছু কথা: লেকচারার, সফল লেখক, ব্যবসায়ী পরামর্শদাতা, এবং অনুপ্রেরনামূলক চিন্তক নেপােলিয়ন হিলের জন্ম ১৮৮৩ সালে। আমেরিকার অঙ্গরাজ্য ভার্জিনিয়াতে। জন্মগ্রহণকারী নেপােলিয়ন হিলের যাত্রা শুরু। হয় মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্থানীয় পত্রিকার। মাউন্টেন রিপোর্টার হিসেবে। জীবনে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন কেন। মানুষ অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ। হয়, আর জীবনে কেনইবা মানুষ অসুখী। হয়’এর কারণ খুঁজে বের করতে। এক্ষেত্রে তাঁর লেখা ‘থিংক এন্ড গ্রো রিচ’ হলাে শ্রেষ্ঠ বই সেটি প্রকাশিত হওয়ার পর পুরাে পৃথিবীতে প্রায় পনেরাে মিলিয়ন কপি বিক্রির রেকর্ড অর্জন করে। প্রায় পাঁচশ সফল মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে। দীর্ঘ সফল জীবন অতিক্রম করে নেপােলিয়ান হিল ১৯৭০ সালে পরলােকগমন করেন। ভূমিকা: ডন এম. গ্রিন। - নেপােলিয়ান হিল ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কেন কিছু মানুষ সফল হয় আর কেন বাকিরা ব্যর্থ হয় এটা কি আপনাকে কখনও হতবাক করেছে? এটা ছিল নেপােলিয়ান হিলের কিশাের বয়সের একটা প্রশ্ন এবং এই প্রশ্নের পেছনে তিনি সারা জীবন কাটিয়েছেন। কেন কিছু মানুষ সফল আর বাকি লক্ষ লক্ষ মানুষ কেন সফল হতে পারে না এই প্রশ্নের উত্তর অন্বেষণ করেছেন যেমনটা পৃথিবীর দ্বিতীয় কোনাে মানুষ কখনও করে নি।। অলিভার নেপােলিয়ান হিল ১৮৮৩ সালে ভার্জিনিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের একটা দুর্গম পাহাড় সমৃদ্ধ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। হিল যে জীবনে সাফল্য অর্জন করবেন এর কোনাে নমুনাই জীবনের শুরুর দিকে ছিল না। কাঠের তৈরি একটা কেবিনে জন্মগ্রহণ করা হিল একদা বলেছিলেন, “আমার পূর্ব তিন পুরুষরা এই পাহাড়ি অঞ্চলের বাইরের জগৎ সম্পর্কে অজ্ঞ থেকেই দারিদ্রতার সাথে কঠোর সংগ্রামের মধ্যে জন্মগ্রহণ করতে, বাস করতাে আর মৃত্যুবরণ করে আসছে।” | জীবন সেখানে খুবই সংকীর্ণ মনে হয় যখন পশ্চিমের কোনাে শহরের সাথে তুলনা করা হয়। উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রশ্নে জীবনের প্রত্যাশা খুবই ছােট ছিল সেখানে। অপর্যাপ্ত পুষ্টির জন্য বহু ভার্জিনিয়াবাসী দীর্ঘস্থায়ী রােগ-শােকে ভুগতাে। মাত্র দশ বছর বয়সে যখন বড় কোনাে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি অর্জনের জন্য সামান্য প্রত্যাশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখন মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে মারা যায় তার মা। পরের বছর বাবা আবার বিয়ে করলেন, আর সেটাই ছিল কিশাের হিলের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। নেপােলিয়ানের সম্মা মার্থা র্যামেই ব্যানার ছিলেন একজন শিক্ষিত মহিলা, উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপালের বিধবা স্ত্রী আর ডাক্তারের মেয়ে। নতুন মা হিলের মধ্যে নতুন সম্ভাবনা দেখতে পেল, যেটা অন্য কেউ কখনও খেয়াল করেনি। তিনি কিশাের বয়সেই এক টাইপ রাইটারের হয়ে বন্দুকের ব্যবসা করতে হিলকে রাজি করান এবং কিভাবে বন্দুক চালাতে হয় তার প্রশিক্ষণও দিলেন। পনেরাে বছর বয়সে ঐ টাইপ রাইটার তাকে দিয়ে
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।