"হিন্দুতীর্থ কামরূপ কামাখ্যা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বিভিন্ন পুরাণ থেকে আমরা জানি, সতীর মৃত্যুর পর শিব ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে সতীদেহ কাঁধে নিয়ে উদ্দাম নৃত্যে প্রমত্ত হন। তখন সৃষ্টিরক্ষার্থে বিষ্ণুও তাঁর সুদর্শনচক্র দ্বারা সতীদেহ খণ্ড খণ্ড করে কর্তন করতে শুরু করলেন। সুদর্শন চক্রে খণ্ডিত সতীর দেহের এক-একটি অংশ যেখানে যেখানে পড়ল, সেখানেই গড়ে উঠল এক-একটি পীঠস্থান। এইভাবে সারা ভারতে গড়ে উঠেছে একান্নটি পীঠস্থান। দেবীর যােনিদেশ পড়েছিল অসমের কামাখ্যায়। সেই থেকে কামাখ্যা হিন্দুদের কাছে এক পরম তীর্থ। দেবী কামাখ্যা এই নামেই পূজিত হন তীর্থযাত্রীদের দ্বারা। অরুণ মুখােপাধ্যায় কামাখ্যা তীর্থক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দ্রষ্টব্য স্থানে নিজে গিয়ে সেখানকার দেবদেবী প্রতিষ্ঠার কাহিনি, বিভিন্ন লােককথার। উৎপত্তির মূল কারণ অনুসন্ধান করে সমস্ত তথ্য পাঠকদের সামনে ধরে দিয়েছেন। হিন্দুতীর্থ কামরূপ কামাখ্যা’ একাধারে প্রত্যক্ষ দর্শন, ভ্রমণ এবং গবেষণার সমন্বয়। পুরাণের গল্প, তন্ত্রতত্ত্ব-কথা, লােককথা, পূজাপদ্ধতি, মন্দিরের শিল্পকলার বিবরণ সহ গ্রন্থটি অনন্য মর্যাদার অধিকারী হয়ে উঠেছে।
Arun Mukhapaddhay-এর জন্ম ১৯৬৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এম.এ.। পারিবারিক ভদ্রাসন চন্দননগর। পেশা শিক্ষকতা। শখে বিশেষ কোনও বিষয় নিয়ে গবেষণা ও প্রয়োজনে ক্ষেত্র-সমীক্ষা। ইতিপূর্বে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর অনুলিখনে খ্যাতনামা বাঙালি লেখকদের স্ত্রীর মুখের কথা আমার স্বামী।‘সেরা লেখিকাদের সেরা গল্প’, ‘একশ বছরের সেরা হাসি’ সম্পাদনাকর্মে যুক্ত থেকেছেন। পশ্চিমবঙ্গের শতবর্ষ অতিক্রান্ত গ্রন্থাগারগুলির ইতিবৃত্ত এই বাংলার শতায়ু গ্রন্থাগার’ নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। তাঁর একক সম্পাদনায় প্রকাশ পেয়েছে ‘বাংলার সেরা প্রবন্ধ, রায়বাহাদুর প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায় প্রণীত ‘দারোগার দপ্তর’(দুই খণ্ড), শৈলবালা ঘোষজায়ার ‘সেরা পাঁচটি উপন্যাস’। চারখণ্ড ‘কল্লোল গল্পসমগ্র’ সম্পাদনায় রেখেছেন নিষ্ঠার স্পর্শ। ‘হিন্দুতীর্থ গয়া’ তাঁর লেখা তীর্থভ্রমণ ও ধর্মবিষয়ক গ্রন্থ।