“মাধ্যম সাক্ষরতা” -বইয়ের লেখকদ্বয়ের কথা তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সংবাদ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের পরিসর দ্রুতই বিস্তৃত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপি চলছে নানামুখী গবেষণা, আলোচনা ও সমালোচনা। এছাড়া গণমাধ্যম সাক্ষরতা নিয়েও প্রচুর কাজ হচ্ছে। হোয়াইট হাউজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে আলোচনা চলছে ভুয়া খবর (ঋধশব ঘবংি) নিয়ে। এই বইটি মূলত সংবাদ, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম সাক্ষরতা নিয়ে। যাতে প্রতিফলিত হয়েছে একবিংশ শতাব্দির প্রেক্ষিত, প্রেক্ষাপট এবং দৃষ্টিভঙ্গি। সময়ের সাথে সাথে সংবাদের সংজ্ঞা ও সংবাদ প্রাপ্তির পুরো প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হয়েছে। এখন সংবাদ আর পরের দিন সকালে হাতে আসার কোন বিষয় নয়। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে তরতাজা সংবাদ পাঠকের কাছে আরো দ্রুত আসছে আর তাতে কাঠামোরও পরিবর্তন এসেছে। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা আছে বইটির শুরুতে। বড় পরিসরে আলোচনা আছে গণমাধ্যম সাক্ষরতা নিয়ে। মনে রাখা জরুরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুদ্ধে গণমাধ্যম সাক্ষরতার বিষয়টি নতুন করে বিশ্বে আলোচিত হচ্ছে। এছাড়া বইটিতে আলোচনা আছে রেডিও সাংবাদিকতা নিয়েও। রেডিও সাংবাদিকতার স্ক্রিপ্ট এবং একটি আদর্শ স্ক্রিপ্ট লেখার কলা কৌশল নিয়ে আলোচনা আছে বইটিতে। যুক্ত আছে বিবিসি বাংলার একটি প্যাকেজ কাঠামোর সংবাদের স্ক্রিপ্ট। নির্বাচন সংক্রান্ত সাংবাদিকতা অধ্যায়টি থেকে পাঠক এ সংক্রান্ত বিস্তারিত ধারণা পাবেন। যা থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত সাংবাদিকতার পূর্ব প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে। বইটিতে ১৯৭১ সালের সাংবাদিকতা নিয়ে দুটো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় রয়েছে। একটি ঐ সময়ের আলোচিত ইংরেজি দৈনিক পিপল্ এর ভূমিকা ও এর বেশ কয়েকটি কার্টুন নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। যা পাঠকের ভাল লাগবে। একই সাথে আছে বাংলাদেশের যুদ্ধ দিনের বন্ধু সায়মন জন ড্রিং এর ঐতিহাসিক প্রতিবেদন তৈরির পেছনের গল্প। ১৯৭৫ সালে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকা- ও ১৯৭৭ সালে বিমান বাহিনীর সংঘঠিত ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সংবাদ ও ছবি নিয়ে একটি গুরুতত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ পাবেন পাঠকেরা। যা পাঠককে বিশেষভাবে আগ্রহী করে তুলেতে পারে। বইটিতে গণমাধ্যম নিয়ে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি স্যারের একটি মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়েছে। যাতে গণমাধ্যম, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে কার্যকর আলোচনা আছে। এছাড়া সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ, কুলদীপ নায়ার, গোলাম সারওয়ার, ফজলে লোহানী, এ্যান্থনি মাসকারেনহাস, রবার্ট ফিস্ক, লরেন্স লিফশুলৎস এর কর্মময় জীবন নিয়ে খুবই প্রয়োজনীয় পরিশিষ্ট বইটিতে পাওয়া যাবে। একই সাথে ১৯৭১ সালে ঢাকায় গণহত্যার ছবি তোলা ফটোসাংবাদিক মিশেল লরেন্ট’কে নিয়ে একটি অধ্যায় পাঠকের ভাল লাগবে বলে আশা রাখছি। বইটি সম্পর্কে যে কোন ধরনের মতামত ও পরামর্শের অপেক্ষায় থাকলাম। অনিচ্ছাকৃত ভুলগুলোর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। বইটি সম্পন্ন করতে গিয়ে কম্পোজসহ আনুসাঙ্গিক কিছু কাজে সহযোগিতা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নূর ইসলাম টিপু। - তাহমিনা হক দিনা - রাহাত মিনহাজ