কৃষক কেন মাংস খাবেন? এই প্রশ্নটির মধ্য দিয়ে অধ্যাপক হারাধন গাঙ্গুলী কৃষি অর্থনীতির একটি অন্যতম মৌলিক সমস্যা তুলে ধরে তার প্রবন্ধের বইটির নামকরণ করেছেন। কৃষি সামষ্টিক অর্থনীতির এখনও প্রধান খাত হিসেবে বিবেচিত। একই সঙ্গে এই গ্রন্থে সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য খাত যেমন আর্থিক খাত, যােগাযােগ, শিল্প এবং বহিঃবাণিজ্যের অসঙ্গতিগুলাে প্রবন্ধসমূহে স্থান পেযেছে সমান গুরুত্বে। উন্নয়নে আমরা এগিয়েছি বহু দূর, এটি যেমন সত্য, তেমনি যাদের শ্রম ও ঘামে উৎপাদন ও বাণিজ্যের চাকা ঘুরছে এবং আরও উন্নয়নের স্বপ্ন আমরা দেখছি সেই প্রান্তিক জনগােষ্ঠীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দিতে আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে। এক দুর্বত্তায়ন প্রক্রিয়া অর্থনীতির আর্থিক খাত থেকে শুরু করে প্রকৃত অর্থনীতির অন্যান্য খাতগুলােকে গিলে ফেলছে। সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বৈষম্যের। বইটিতে অর্থনীতির মৌলিক ভাবনা থেকে উৎসারিত নিবন্ধগুলােতে চালের বাজার ওঠানামার মৌলিক কারণ, শ্রমিকদের শােষণ প্রক্রিয়ার স্বরূপ, অনুপার্জিত আয়ের যথেচ্ছ ব্যবহার, ধনিদের আরও ধনি হয়ে ওঠার, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট, খেলাপি ঋণ ও ব্যাংক লুটের কাহিনী এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপ্রকৃতিসহ নানা বিষয়ে আলােকপাত করা হয়েছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর দর্শনের মতাে কয়েকটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক লেখাও স্থান পেয়েছে এই গ্রন্থে। রয়েছে প্রথিতযশা গবেষক ড. মাহবুব হােসেন এবং খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমান ভাইয়ার জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে বিশ্লেষণ। স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ চার দশকের অভিজ্ঞতায় অধ্যাপক গাঙ্গুলীর লেখাগুলাে অনুসন্ধিৎসু ও বিশ্লেষণধর্মী এবং একই সাথে উন্নয়নের নানামুখী পথ নির্দেশনায় সমৃদ্ধ যা সাধারণ পাঠকদেরও আকৃষ্ট করবে। অর্থনীতির মতাে জটিল ও কৌশলগত বিষয় সহজবােধ্য প্রাঞ্জল ভাষায় পাঠকের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে কৃষক কেন মাংস খাবেন?' নামের এই প্রথাবিরােধী গ্রন্থে।