ভূমিকা এই বই বুদ্ধিজীবীদের উদ্দেশে, অথবা যাঁরা কোনো বাস্তব সমস্যাকে শুধু আলোচনা বিষয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখে খুশি, তাঁদের উদ্দেশে লেখা নয়।গভীর দার্শনিক তত্ত্ব বা পাণ্ডিত্যের পরিচয় এই বইয়ের পরবর্তী পৃষ্ঠাগুলোতে পাওয়া যাবে না।যাকে আমি সাধারণ বুদ্ধি বলে বিশ্বাস করি, তারই প্রেরণা থেকে কয়েকটি মন্ত ব্যকে একত্র সাজিয়ে দেওয়াই আমার লক্ষ্য এই বই-এ।আমি শুধু এইটুকু দাবি করছি যে, যেসব রেসিপি বা অভিজ্ঞানসমূহ আমি পাঠকদের উদ্দেশে নিবেদন করলাম, তা আমার নিজের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের দ্বারা সমর্থিত। এবং আমি নিজে যেখানেই এসব ব্যবস্থা অনুসরণ করেছি, সেখানেই আমি সুফল পেয়েছি।অতএব আমি আশা কবি, অগণিত নর-নারীর মধ্যে যাঁরা দুঃখে শুধু পীড়িতই হয়েছেন, দুঃখকে উপভোগ করতে পারেন নি, এই বই পড়ে তাঁরা অনুভব করবেন যে, তাঁদের সমস্যাগুলো নির্ণেয় হচ্ছে এবং যেসব সাজেশন বা ঈস্পিত অভিবাবন দেওয়া হয়েছে তা থেকে তাঁরা প্রতিকারও পেয়ে যেতে পারেন।আমি এই বিশ্বাসে নির্ভর করে এ বই লিখেছি যে, বহু অসুখী লোক সুপরিচালিত প্রয়াসের সাহায্যে সুখী হতে পারবেন। বারস্ট্রান্ড রাসেল সূচিপত্র *ভূমিকা প্রথম খণ্ড : দুঃখের কারণ *দুঃখবাদ *প্রতিযোগিতা *অবসাদ *পাপসচেতনতা *নির্যাতন-স্পৃহা *জনমত-ভীতি দ্বিতীয় খণ্ড : সুখের কথা *সুখের কথা *উপভোগ-ক্ষমতা *স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসা *পরিবার ও সুখ *কাজ *নৈব্যক্তিক অনুরাগ *চেষ্টা ও বিরতি *সুখী মানুষ
মােতাহের হােসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬) জীবদ্দশায় পরিচিত মণ্ডলে এবং সাধারণ পাঠকদের মধ্যে বিশেষ শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। সমাজ ও রাষ্ট্রের যদি নূন্যতম আনুকূল্য পেতেন তা হলে জীবৎকালেই তাঁর দু’চারটি বই প্রকাশিত হতাে। অতীব দুঃখের বিষয় মৃত্যুকালে তার কোনাে প্রকাশিত গ্রন্থ ছিল না। সাহিত্যজীবনের নানা পর্যায়ে মােতাহের হােসেন চৌধুরী একাধিক নামে পত্রপত্রিকায় লিখেছেন, যেমন- মােতাহের হােসেন বি. এ, সৈয়দ মােতাহের হােসেন চৌধুরী বি.এ, মােতাহের হােসেন চৌধুরী এম. এ, মােতাহের হােসেন। চৌধুরী প্রভৃতি। শেষ জীবনে শুধু মােতাহের হােসেন চৌধুরীই লিখতেন। চাকরি-বাকরিসংক্রান্ত ও ব্যক্তিগত কোনাে প্রয়ােজনে তিনি তাঁর পিতৃদত্ত নাম সৈয়দ মােতাহের হােসেন চৌধুরী লিখতেন। তার পৈত্রিক বাড়ি নােয়াখালী জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে। পিতা সৈয়দ আবদুল মজিদ চৌধুরী ছিলেন একজন সাব-রেজিস্ট্রার। খ্রিস্টীয়-ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগে এটি ছিল সম্মানজনক চাকরি । তাদের পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায়, ফিরােজ শাহের রাজত্বকালে শাহ সৈয়দ আহমদ তনুরী ওরফে শাহ মিরান নামে একজন সুফি সাধক ইরাক থেকে ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই উপমহাদেশে আসেন। মােতাহের হােসেনের মাতামহ মৌলবী আশরাফ উদ্দিন আহমদের বাসভবন ছিল কুমিল্লা শহরের ‘দারােগা-বাড়ি'। এই দারােগা-বাড়িতেই মােতাহের হােসেনের জন্ম। তাঁর নিজের হাতে লেখা পুরনাে কাগজপত্র দেখে প্রবন্ধ-সমগ্রের সম্পাদক সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রমাণ পেয়েছেন তাঁর জন্মতারিখ : ১ এপ্রিল ১৯০৩।