“মৌমাছি পালন ও মধু সংগ্রহ" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ মধু আমাদের কাছে বিশেষ পরিচিত তাই মধুর সম্পর্কে বিশেষভাবে লেখার কোন প্রয়ােজন আছে বলে মনে হয় না। আমরা সব কথার উপমা দিতে গিয়ে বলে থাকি-আহা, যেন মধু। মধু কথাটির সঙ্গে আমাদের একটা বিশেষ পরিচিতি আছে। কিন্তু এই মধু কোথা থেকে কিভাবে আসে, সে সম্পর্কে আমরা জ্ঞাত নই, সাধারণত: আমরা ছােটবেলা থেকেই শুনে এসেছি বা জেনেছি যে মৌচাক থেকে মধু পাওয়া যায়। মৌচাককে মধু তৈরির কারখানা হিসাবে ধরে নিলেও, কি জিনিস দিয়ে এই মৌচাকরূপ কারখানায় মধু তৈরি হয় সে বিষয় সম্পূর্ণ আমাদের জানা নেই। এই বইটিতে সেই কথাই বিস্তারিতভাবে আলােচনা করা হয়েছে। কিভাবে মৌমাছিরা তাদের চাকে মধু তৈরি করে, তার সাধ্যমত বিবরণ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মধুর মধ্যে কি কি ভেষজ গুণ আছে, কি কি উপাদান আছে তারও বিবরণ দিতে চেষ্টা করা হয়েছে। এই সব মৌমাছির প্রজাতি এবং তাদের বাহ্যিক ও আন্তরিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিবরণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে এই মধু সৃষ্টিকারী ক্ষুদ্র প্রাণিদের কিভাবে পালন করতে হয়। কৃত্রিম ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কিভাবে মৌমাছি পালন করা যায়, কিভাবে তা থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়, তার জন্য কি কি বস্তুর দরকার হয়, তারও বিবরণ দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে ছয়টি ঋতু আছে। এই ঋতুতে কিভাবে মৌমাছির চাক রক্ষা করতে হয়, কিভাবে মধু সংগ্রহ করতে হয় তারও সাধ্যমত বিবরণ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে মৌমাছিদের কিভাবে চাকে রাখা যায়, যে সব প্রাণি মৌমাছিদের শত্রু তাদের হাত থেকে কিভাবে মৌমাছি ও মধু রক্ষা করা যায়, তারও বিবরণ দেওয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে এবং কৃষিজাত সম্পদের দিক থেকে আমরা মৌমাছিদের কাছে কতটা উপকৃত হয়ে থাকি সে কথাও বলা হয়েছে।