দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে এবং একই সঙ্গে ভারতে শুরু হয়েছে একদিকে ভারত ছাড়াে আন্দোলন, অন্যদিকে নেতাজি সুভাষ তার আজাদ হিন্দ ফৌজকে ডাক দিয়েছেন— “দিল্লী চলাে”। ১৯৪৩ সালে রাজশাহী জেলে বসে এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর লেখা এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপট— ভারতের ও বহির্বিশ্বের সেই অনিশ্চিত উত্তাল সময়। যুদ্ধের কারণে নিপ্রদীপ এক সন্ধ্যায় প্রবল ঝড়বাদলের হাত থেকে বাঁচতে অপরিচিত দুই যুবক-যুবতী পরস্পরের অজান্তে সাময়িক আশ্রয় নিয়েছিল কলকাতার উপকণ্ঠে এক ফাকা বাড়িতে সিভিল গার্ডদের একটি দল তাদের দেখতে পেয়ে থানায় নিয়ে যায়। থানার মধ্যেই যুবক-যুবতীর বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। কিছুদিন পরে তপতী বাবামায়ের পছন্দ-করা পাত্রের সঙ্গে বিয়ে এড়াতে থানার মধ্যে অনুষ্ঠিত আকস্মিক বিয়ের অপরিচিত স্বামীর কর্মক্ষেত্রে গিয়ে উপস্থিত হয়। স্বাধীনতাসংগ্রামী সম্বরণের তখন স্থান হয়েছে জেলে। সুন্দরবনের সেবাকেন্দ্র থেকে লেখা তপতীর এবং জেলে বসে লেখা সম্বরণের চিঠির মধ্যে দিয়েই। তারা পরস্পর পরস্পরকে চেনে, জানে, উপলব্ধি করে। চিঠিগুলাে আলাদা আলাদা ভাবে যেন। এক-একটি প্রবন্ধ। উপন্যাসের কাঠামাের মধ্যে তরুণ স্বাধীনতা-সংগ্রামীর আদর্শ, বিশ্বাস এবং স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন প্রতি ছত্রে প্রতিফলিত যার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম।