বেলা দেড়টা। একটু আগে সবুজ ঢাকা থেকে ফিরেছে। বাড়ি ফিরেই বাবার রুমে ঢুকেছে। গ্রাম অঞ্চলের আট দশটি বাড়ির মতই সবুজদের বাড়ি। বাড়িটি বিভিন্ন গাছপালায় ভরা। উত্তরের ঘরটি টিন ও কাঠ দিয়ে গড়া দোতলা ঘর। ঐ ঘরের নিচ তলায় সবুজের মৃত বাবা আফাজ তালুকদার যে রুমে থাকতেন, সবুজ এখন সেই রুমে বাবার ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাবার ছবির পাশেই মায়ের ছবি টাঙ্গানো। সবুজ তালুকদার। বয়স পঁচিশ বছর নয় মাস। উচ্চতা পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি। ফর্সা, মুখমন্ডল গোল, নাক সরু, চুল হালকা বাদামি রঙের। মাঝারি স্বাস্থ্যের অধিকারি হলেও লম্বা হওয়ায় স্বাস্থ্য বুঝা যায় না। চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা পড়ে। সব মিলিয়ে মুখশ্রীতে নিষ্পাপ ভাব আছে। তবে নিজের চেহারা সম্বন্ধে গত চব্বিশ বছর ধরে সবুজের আলাদা একটি পর্যবেক্ষণ ছিল, যা এই এক বছরে ধীরে ধীরে ভুল বলে প্রমানিত হচ্ছে। এজন্য সবুজ নিজেকে নিয়ে বেশ সংসয়ে আছে। আর সংসয়ে আছে বলেই নিজ চেহারা সম্পর্কে মন্তব্য করার দুঃসাহস দেখায় না কখনো। গত চব্বিশ বছর ধরে সবুজের ধারনা ছিল সে দেখতে খুব বিশ্রী। প্রেম না করেও ঐ চব্বিশ বছর তার জীবন ছিল বিরহ মোড়কে মোড়ানো, যাপন করেছে নিরামিষ জীবন। বাবার রুমে ঢুকার সাথে সাথে সবুজের হাস্যজ্জ্বল মুখ মলিন হয়ে গেল। তলিয়ে গেল স্মৃতির গহীণ