“বাংলার চিত্রকলা: মধ্যযুগ থেকে কালীঘাট" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বাংলার প্রাক-ঔপনিবেশিক চিত্রকলা বিষয়ে অল্পই তথ্য পাওয়া যায়। পুঁথিচিত্র, পুঁথির পাটা, রথচিত্র, পট, মন্দিরগাত্রচিত্র এখনাে পর্যন্ত যা অবশিষ্ট আছে তা থেকেই ঐ পর্যায়ের বাংলার চিত্রকলা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা হয়। এ বিষয়ে প্রকাশিত গ্রন্থ ও প্রবন্ধের সংখ্যাও অল্প । সবচেয়ে পুরনাে চিত্রকলার নিদর্শন তন্ত্রযান পুঁথিচিত্র তারপর বাংলাপুঁথির পাটা ও এ যাবৎ প্রাপ্ত চিত্রিত অল্প সংখ্যক পুঁথি। মধ্যযুগের চৈতন্য সাহিত্যগুলি থেকে ষােড়শ-সপ্তদশ শতকে যে বহুসংখ্যক। পটচিত্র ও দেওয়ালচিত্র অঙ্কিত হত তার উল্লেখ পাওয়া যায়। ধর্মমঙ্গলে অচ্যুৎ চিত্রকরের মন্দিরগাত্রচিত্রের উল্লেখ আছে এছাড়া চৈতন্যজীবনী ও বৈষ্ণবগ্রন্থেও অনেক ভাস্করের নাম ও শিল্পকর্মের বিবরণ পাওয়া যায়। প্রাক উপনিবেশিক যুগের টেরাকোটা শিল্প ছিল। পাটাচিত্র, মন্দির-গাত্রচিত্র ও রথগাত্রচিত্রের প্রায় সমধর্মী। বাংলার প্রাক ঔপনিবেশিক যুগের চিত্রকলা তাচ্ছিল্যের বিষয় ছিল না। দুর্ভাগ্যের বিষয় একালের শিল্পরসিকদের তা বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। এ গ্রন্থে বাংলার প্রাক ঔপনিবেশিক চিত্রকলা বিষয়ে ছয়টি সংক্ষিপ্ত নিবন্ধ সংকলিত হয়েছে। এ বিষয়ে আরাে অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের। অবকাশ রয়েছে, গ্রন্থটি তার একটি ভূমিকা বা তথ্যসূত্র বিশেষ। কালীঘাটের পটের সূচনা পশ্চিমের শিল্পকলার প্রভাব বিস্তারের আগে। যুগসন্ধিক্ষণের শিল্প হিসেবে এই গ্রন্থে একটি নিবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জন্ম ১৯৫১, কলকাতা। কবি, প্রাবন্ধিক, উত্তর আধুনিক সাহিত্য চেতনার অন্যতম প্রবক্তা। সাহিত্য ও শিল্পকলার জগতে সমানভাবে বিচরণ করেন। উচ্চাঙ্গ সংগীত ও লোকসংগীত সংগ্রহ করা তার নেশা। তিনটি সেমিস্টারে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত-লেখক হিসেবে বিশেষ বক্তৃতা দিয়েছেন। সংস্কৃতি মন্ত্রকের টেগোর ন্যাশনাল স্কলার ছিলেন। প্রকাশিত প্রবন্ধের সংখ্যা ৭০ এর ওপরে। সাহিত্যতত্ত্ব বিষয়ক পত্রিকা ‘গাঙ্গেয়পত্র’ সম্পাদনা করছেন ১৯৭৫ থেকে। পদ্ধতিগতভাবে সাহিত্যের ছাত্র না হলেও যাদবপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কলকাতা, দক্ষিণ গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছেন। ‘ভ্রমরা’ লোকসংগীত সংস্থার সভাপতি। ‘কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রে’-এর সঙ্গে যুক্ত।