‘ব্রাজিলের রােদ বৃষ্টি ছায়া' বইটি সম্পর্কে কিছু কথাঃ পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল, ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় দেশও সে, সীমান্ত রয়েছে ১০টি দেশের, পূর্ব সীমানা জুড়ে আছে আটলান্টিক মহাসাগর। সাগর মহাসাগর অরণ্য পর্বত নদী হ্রদের এক বিপুল সমাবেশ সারাটা ব্রাজিল জুড়ে। ব্রাজিলে আছে বিশ্বের প্রশস্ততম নদী আমাজন, বিশ্বসেরা ইজুসু জলপ্রপাত, জগৎবিখ্যাত ক্রাইস্ট দ্যা রিডিমার, ইতাইপু বাঁধ, সুগারলােফ মাউন্টেন। এখানেই দেখা মিলবে বিশ্ববিখ্যাত কার্নিভাল, সাম্বানৃত্য, নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকত, নিবিড় সবুজ অরণ্য, বর্ণিল পাখি, ফুটবলের মায়াবী হাতছানি। পর্তুগিজ শব্দ ব্রাজিলউড (Brazilwood) থেকে ব্রাজিল শব্দটি এসেছে বলে অনেকের ধারণা। পর্তুগিজ ভাষায় ব্রাজিল উডকে পাউ-ব্রাজিউ (Pau-Brasil) নামে ডাকা হয়। ব্রাজিউ এসেছে ‘জলন্ত কয়লার মত লাল শব্দগুচ্ছ থেকে। ব্রাজিল বাংলাদেশ থেকে বহুদূরে, ভিন্ন গােলার্ধে তার অবস্থান। তাকে কাছে থেকে দেখার অনুভূতি একদম আলাদা। স্বল্পকালীন ভ্রমণেও তার রূপ-রস-গন্ধ-শব্দস্পর্শ-ভালােবাসা চোখের কোণে হৃদয়ের ক্যানভাসে দাগ কেটে যায় আনমনে। তারই নির্যাস কাগজেকলমে ধরা পড়েছে, আলােকচিত্রে বন্দী হয়েছে অদেখা দেশটির রূপমাধুর্য। সেই কলমছবি আর ছায়াছবি মিলে তৈরি হয়েছে এক অনবদ্য ভ্রমণকাহিনি যার শিরােনাম ‘ব্রাজিলের রােদ বৃষ্টি ছায়া।
ভ্রমণ বিচিত্রাঃ এই বই পড়ে জানা যাবে মস্কোর সাত বােনের কাহিনী, প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু ক্রেমলিন ও মস্কোর ঘণ্টার ইতিবৃত্ত, রেড স্কয়ার, সেন্ট ব্যাসিল বেসিলিকা, পিটার দি গ্রেট, মেরী শেলী ও ফ্রাংকেনস্টাইনের গল্পের জন্ম, অনন্য ইন্টারলেকেন, বহু সংস্কৃতির শহর বার্লিন ও বিভাজনের দেয়াল বার্লিনওয়াল, ইউরােপীয় আর্কিটেকচারাল জেম প্রাগ কাহিনী, প্যারিসের আইফেল টাওয়ার, নটরডেম ক্যাথেড্রল, ল্যুভর মিউজিয়াম, প্যারিস গেট, বাস্তিল দুর্গ, জাপানের ইয়ােকোহামা সফর, পৃথিবীর সর্বোচ্চ মসজিদসহ অমুসলিম দেশের বিখ্যাত মসজিদের বর্ণনা এবং ভিভিআইপি সফরের অনন্য অভিজ্ঞতাসহ আরাে অনেক কিছু।
‘নাইজেরিয়া: দূরদেশে আপন ভুবন’ বইটি সম্পর্কেঃ আফ্রিকা মহাদেশ নিয়ে মানুষের অন্তহীন কৌতূহল । ধূসর মরুভূমি, গহীন অরণ্যভরা এ মহাদেশে রয়েছে। প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ ও বৈচিত্র্যময় জীবনপ্রাচুর্য । পশ্চিম-আফ্রিকার এমনই এক বিশাল দেশ নাইজেরিয়ার নান্দনিকরূপ হৃদয় ছুঁয়ে যায় । অঞ্চলভেদে সেখানকার বিভিন্ন গােত্রের মানুষের ভাষা, জীবনাচার, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিতে রয়েছে স্বকীয়তা। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আদিমানুষের বেঁচে থাকার নিরন্তর সংগ্রাম, পাশাপাশি নগরসভ্যতার ডামাডােলে মতােয়ারা শহুরে মানুষের জীবনযাপনের বিচিত্র রূপ বড় বিস্ময়কর। নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের বাউচি স্টেটের মানুষের জীবনের উল্লেখযােগ্য বিষয়গুলােকে প্রাধান্য দিয়ে লেখা এ গ্রন্থে তা নিখুঁতভাবে চিত্রিত। বিশেষ করে সেখানকার সাধারণ মানুষের হৃদয়ের কোমল স্পর্শে সিক্ত হওয়ার লক্ষণ অত্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে । নাইজেরিয়ার অর্থনৈতিক সুবর্ণ সময়ের বর্ণিল স্মৃতির সুখানুভূতির পাশাপাশি সময়ের দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় আজকের বিধ্বস্তরূপ বড় মর্মস্পর্শী । এমনই এক সখ-দুঃখ। আনন্দ-বেদনার মিশ্র-অনুভূতিসমৃদ্ধ গ্রন্থ ‘নাইজেরিয়া : দূরেদেশে আপন ভুবন।
‘ফুলের দেশ হল্যান্ড’ বইয়ের কথাঃ পৃথিবীকে জানা বা দেখা মানুষের সুপ্ত বাসনা । পৃথিবীর জন্মলগ্ন থেকে শুরু করে আজ অব্দি মানুষ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ানাে বা বিভিন্ন দেশের সামাজিক কৃষ্টি ইত্যাদি জানার ইচ্ছা মনের মাঝে লালন করে আসছে। কেউ কেউ হয়তাে মনের লালিত ইচ্ছাকে পূরণ করতে সক্ষম হয় বিভিন্ন দেশ ঘুরে । আবার অনেকের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মনের লালিত স্বপ্ন পূরণে অক্ষম থাকে। ছােট হয়ে আসছে পৃথিবী। পৃথিবীর একপ্রান্তে বসে অন্য প্রান্তের খবর মানুষ এখন মুহূর্তে ঘরে বসে পেয়ে যাচ্ছে। যা ছিল অতীতে অত্যন্ত কঠিন। ফুলের দেশ হল্যান্ড’ লেখক মােঃ জিয়াউদ্দিন ভূঁইয়া। রাজুর সেই অতীতেরই এক স্মৃতিচারণ । তার দীর্ঘ। পাঁচ বছর হল্যান্ড প্রবাস জীবনের এক বর্ণিল ভ্রমণকাহিনী । অত্যন্ত সহজ-সাবলীল ভাষায় লেখক হল্যান্ড (দি নেদারল্যান্ডস) সম্মন্ধে বিভিন্ন বিষয়ের আলােকপাত করেছেন-যা পাঠক মনে রেখাপাত করবে । সচিত্র এই ভ্রমণ-কাহিনীর প্রচ্ছদ থেকে শুরু করে যবনিকা পর্যন্ত প্রতিটি স্তর অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন এবং দৃষ্টিনন্দিত। ফুলের দেশ হল্যান্ড’ পাঠক সমাজে সুপাঠ্য বিবেচিত হবে বলে আমি আশাবাদী।