"সৃষ্টিশীল মানুষের ভুবন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: কত ইচ্ছের ফুল ফোটে মানুষের বুকের ভেতর। জীবনকে অন্যরকম করে সাজিয়ে তােলার অভিপ্রায় দুরন্ত হয়। ভাবে সবার চেয়ে আমি আলাদা। আমি বেড়ে উঠব নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে। লেখাপড়া, কাজকর্ম, চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া এবং অর্থবৃত্তে। কিন্তু জীবন বাড়তে থাকে আর স্বপ্ন কমতে থাকে। কমতে থাকে কেননা সাফল্যের পথ বড়াে কঠিন। বড়াে বন্ধুর। বন্ধুর পথে চলতে চলতে নেমে আসে ক্লান্তি। স্বপ্নের দিকে ছুটতে ছুটতে বেড়ে ওঠে হতাশা! এভাবে ক্লান্তি আর হতাশার জ্বরে আক্রান্ত মানুষগুলাে মনের দিকে থাকে দুর্বল। স্বপ্ন ডানা আর বিস্তারিত হয় না। ডানা খােলে না স্বপ্ন পাখি। অবসাদ নেমে আসে জীবনে। চারদিকে দেখে নৈরাশ্যের ছায়া। জীবনের পরিধি ক্ষীণ হতে থাকে। বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে যায় সীমাবদ্ধ। বন্ধু সংখ্যা কমে যায়। তখন মানুষ নিজের কাছে নিজে পরাজিত হতে থাকে। নিজেকে বেমানান মনে হয় সব ক্ষেত্রে। ভাবতে থাকে আমি এর উপযােগী নই। মনে হয় পৃথিবী অবহেলা করে। এভাবে নিজের কাছে নিজেই পরাজিত হতে থাকে মানুষ। সমাজ সংসার মনে হয় অসার। জীবনকে মনে হয় বেদনার এক বারিধি। কেন স্বপ্ন ভঙ্গ হয়। মানুষের? তারপর? এই বইটি সৃষ্টিশীল মানুষের আশা, স্বপ্ন ও জীবনের কথা বলছে।
জাকির আবু জাফর কবি, কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক ও শিশুসাহিত্যিক। লেখালেখি কিশােরকাল। থেকে। জন্ম ১লা জুলাই ১৯৭১ ফেনী জেলার সােনাগাজীতে। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লােক প্রশাসনে। তিনি দল, গােষ্ঠী এবং সাম্প্রদায়িক প্রবণতার ঊর্ধ্বে। সদালাপি ও মিষ্টভাষী। স্বাপ্নিক ও রােমান্টিক। আত্মবিশ্বাসী একজন মানুষ। তার কাছে জীবন এক আনন্দময় প্রবাহ। কবিতা তার আত্মার আহার। তার অবয়বে জড়িয়ে আছে কাব্যিক সৌন্দর্য। লেখনে, কথনে ও চলনে তিনি সার্বক্ষণিক কবি। কবিতা, কিশাের কবিতা, উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ মিলে তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪০-এর অধিক। প্রকাশিত কবিতার বই খোপা খুললেই রাতের। নদী, চোখের মতাে আশ্চর্য আয়না, আরাে একটি উৎসবের গান, ব্যক্তিগত জোছনার বিজ্ঞাপন, মেঘের মানচিত্র অথবা বনান্তরের দিন, তােমার সমস্ত গােপন, অজস্র বর্ষণে চিরদিন, রােদেরও আছে অন্ধকার, তােমাকে ভিজিয়ে দেবাে চাঁদের বৃষ্টিতে, রাত ও রৌদ্র, বৃষ্টির বৃত্তান্ত শােনে রাতের আকাশ, মুখােমুখি আজীবন, নন্দিত বেদনা, কালের সমুদ্র ও বাছাই কবিতা।