"ঢাকার প্রাচীন পেশা ও তার বিবর্তন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ কয়েক শত বছরের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষী ঢাকা। অনেক ঐতিহাসিকের মতে মােগল শাসনকর্তা ইসলাম খাঁর ঢাকের বাজনায় প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা। কারও মতে প্রাচীন মন্দির ঢাকেশ্বরীর নামে ঢাকা। নামকরণ যেভাবেই হােক না কেন, বাংলার রাজধানীর ইতিহাসে গৌড়, পাণ্ডুয়া ও সােনারগাঁওয়ের পরই ঢাকার অবস্থান। ব্রিটেন কর্তৃক ভারত ঔপনিবেশিক শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল বহুদিন। যার কারণে সামসময়িক বিশ্ব ও পাশ্চাত্য দেশসমূহের ইতিহাস থেকে ভারতবর্ষের ইতিহাস ভিন্ন। ভারতবর্ষে ব্যবসার পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটেছে সামন্ততন্ত্রের সাথে সমন্বয় সাধন করে। বরােদা, মহিসুর, ইন্দোর ও ট্রাভাঙ্কোরদের মতাে সমস্ত শাসকগণ নিজেরাই শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করে শিল্পপতিদের নানাভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করেছে। তাই পাশ্চাত্যের মতাে শিল্পনির্ভর ব্যবসার উন্মেষ ঘটতে পারেনি এই সমতটে। বাংলাও ছিল সেই ধারাবাহিকতার শৃঙ্খলে বন্দি। বাংলার শিল্পে হস্তশিল্পের প্রাধান্য ছিল সেই সময়। বস্ত্রশিল্প, ছুরি তৈরি করা শিল্প, চামড়া পাকাকরণ শিল্প, কাগজ শিল্প, দেশীয় ঔষধ শিল্প, তৈল, কাসা, তামা শিল্প ছিল উল্লেখযােগ্য। জেমস ওয়াইজের বর্ণনা থেকে জানা যায়; ঢাকা প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে পেশার ওপর ভিত্তি করে মহল্লা গড়ে উঠেছিল। সেই সমস্ত ব্যবসা আজ বিরাট আকার ধারণ করেছে। যেমন ভিস্তির পানি এখন ওয়াসার কাঁধে, বন্ধকির টাকার ব্যবসা এখন ব্যাংকে। যেমন- শাখা বানায় যেখানে সেটা শাখারিদের বাজার। এলাকার নাম বিশ্লেষণ করলেই ঢাকার পুরানাে ইতিহাসের দরজায় পৌঁছে যাওয়া যায়। লেখাগুলােতে অতি ক্ষুদ্রভাবে হােক আর চরমভাবেই হােক সেই চেষ্টা করা হয়েছে।