"বক্তৃতা শেখার কলাকৌশল" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ অর্থযুক্ত কথা সভা-সমাবেশে সুশৃঙ্খলভাবে উপস্থাপন করার নামই বক্তৃতা। প্রতিটি মানুষের মুখ্যগুণ হিসেবে বিবেচিত সঠিক জায়গায়, সঠিক সময়ে, সঠিক কথাটি বলতে পারা। বক্তৃতা দিতে না পারলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা যায় না, অন্যের উপকারি মনােভাবও প্রকাশ করা যায়। এমনকি সভা-সমিতিতে কাঙ্ক্ষিত বিষয়ের ওপর প্রস্তাব দিতে না পারলে, সেই প্রস্তাবও যাচাই-বাছাইয়ের দিকে যায় না। সুতরাং সবারই উচিত বক্তৃতা শেখা এবং অন্যদের উৎসাহিত করা। আমিও এক সময় বক্তৃতা দিতে পারতাম না। এই ব্যর্থতার কথা কাউকে বলতেও পারতাম না। সভা-সমিতিতে আমাকে অতিথি হিসেবে প্রস্তাব দিলে অতি সুকৌশলে শরীর অসুস্থ্য, কাজে ব্যস্ত কিংবা বিয়ের দাওয়াত আছে, এসব অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যেতাম। তখন মনে হতাে, আল্লাহ আমাকে কেন বাঁচিয়ে রাখল? তারপর আমার মনের গােপন কষ্ট নামক রােগটিকে সুস্থ্য করার লক্ষে এবং আমার মতাে যারা অক্ষম ও অপারগ, তাদের কথা বিবেচনা করে ১৯৯৯ সালের ৩০ এপ্রিল, ঢাকায় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের দোতলায় বক্তৃতা প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করি। অন্যেরা কীরকম উপকার পেয়েছিলাে আমি জানি না, কিন্তু আমি অনেক সফল হয়েছি। যার ফলে আমি বর্তমানে বক্তৃতা প্রশিক্ষণ কোর্সের একমাত্র শিক্ষক হতে পেরেছি। সে সময় এত উন্নতমানের প্রচার মাধ্যম ছিল না। এ ছাড়া আমার বয়স এবং অভিজ্ঞতা কম ছিল বলে অনেকেই উপকৃত হওয়ার পরেও ঠিকমতাে ফি দিতেন না। ফলে লােকসান এবং সময়ের অপচয়ের দিক বিবেচনা করে তিন বছর পার না হতেই এটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই। তারপর ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর, অনেকের অনুরােধে ঢাকায় কমলাপুর, ১০ কবি জসীম উদদীন রােড, কবি জসীম উদ্দীনের বাসভবন প্রাঙ্গণে পুনরায় বক্তৃতা প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করি এবং ব্যাপক সাড়া পাই। পুনরায় চালু করার পর থেকে প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণার্থীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেকে এ ধরনের বই কেনার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। সকল আগ্রহীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বইটি লিখতে বাধ্য হই। বইটি পড়ে পাঠকরা উপকৃত হলে আমার হবে আনন্দ ও স্বপ্ন-জয়ের সুখ।"